১৪৪ ধারা অমান্য করে ফসল তুলে নিয়েছে আ.লীগের নেতাকর্মীরা

১৪৪ ধারা অমান্য করে ফসল তুলে নিয়েছে আ.লীগের নেতাকর্মীরা
প্রকাশিত

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কৃষকদের জমি থেকে জোরপূর্বক ফসল (আলু) তোলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও ঘটে। স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেছেন যে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের জমি দখল ও ফসল নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সাধনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র ও থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ অনুযায়ী, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক খালিস মিয়া ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কয়ছর মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক কৃষক মুহিবুর রহমানের দুই একর জমি থেকে কয়েক লাখ টাকার আলু তুলে নিয়ে যায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

জানা যায়, ভূমি দখলের অভিযোগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কৃষক মুহিবুর রহমান ফজলুর রহমান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে কুলাউড়া থানার এসআই মুহিত মিয়া বিরোধপূর্ণ জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। তবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ফজলুর রহমান ও কয়ছর মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক শনিবার সকালে জমিতে প্রবেশ করে আলু তুলে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার আগে গত ১১ মার্চ ফজলুর রহমান ও তার সহযোগীরা মুহিবুর রহমানের ছেলে লুৎফুর রহমানসহ স্থানীয় কৃষকদের জমি থেকে মাটি কেটে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজে ব্যবহারের জন্য বিক্রি করে দেয়। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় লুৎফুর রহমান আহত হন। পরে তিনি কুলাউড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ ছাড়া ফসল তোলার সময় মুহিবুর রহমানের ছেলে মাহবুব হোসাইনও প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন।

কৃষক মুহিবুর রহমান, নাইওর মিয়া ও লুৎফুর রহমান বলেন, "আমাদের মৌরসী জমি দখল ও ফসল নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তারা প্রায় ৪০০ মণ আলু তুলে নিয়ে যায়, যার বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। কিন্তু পুলিশ তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।"

অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফজলুর রহমান ও শ্রমিকলীগ নেতা কয়ছর মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমরা কৃষকদের জমি থেকে আলু তুলিনি বা মাটি বিক্রি করিনি। সরকারি কাজে সহযোগিতা করেছি মাত্র।"

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আল আমিন সরকার বলেন, "ঠিকাদার যদি কৃষকদের জমি থেকে ক্ষতিপূরণ ছাড়া মাটি নিয়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।"

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন, "আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ করে ফসল তোলার অভিযোগ পেয়েছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, "কৃষকদের মালিকানাধীন জমি থেকে কেউ মাটি কেটে নিতে পারবে না। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com