
গ্রেফতারকৃত আকাশ মন্ডল ইরফান
চলতি সপ্তাহে আলোচিত চাঁদপুরের হাইমচরে জাহাজে ৭ জন খুনের ঘটনায় রহস্য উদঘাটন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
মুনীম ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের প্রতিশোধ নিতে আকাশ মন্ডল ইরফান জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াসহ অন্যদের হত্যা করে। এমভি আল বাখেরা নামের ওই জাহাজ মেঘনা নদীতে সার বহন করতো।
মঙ্গলবার ইরফানকে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ইরফান প্রথমে খাবারের মধ্যে ঘুমের অষুধ খাইয়ে সবাইকে অচেতন করে। পরে হাতে গ্লাভস পড়ে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর সবাইকে কোপানের পর মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজে জাহাজ চালিয়ে হাইম চর এলাকায় এসে অন্য একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যান।
তিনি জানান, জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে তাকে কোনো প্রকার বেতন ভাতা দেন নি। উল্টো দুর্ব্যবহার করতো। ক্ষোভ থেকে প্রতিশোধ নিতে আকাশ মন্ডল ইরফান ওই হত্যাকান্ড ঘটায়। মুলত, মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার সময় অন্যরা দেখে ফেলায় ইরফান তাদেরও হত্যা করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান র্যাবকে জানায়, জাহাজের বাজার করতে ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কিনে নেয় ইরফান। যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি আগেই জাহাজেই ছিল। জাহাজে নিরাপত্তার জন্য কুড়ালটি রাখা হয়েছিল।
খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী। এ ছাড়া মারাত্মক আহত সুকানি জুয়েল কথা বলতে পারছেন না কিন্ত লিখে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন বলে র্যাব জানিয়েছে।
এদিকে, ওই ৭ খুনের ঘটনায় মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে। আজ বুধবার কুমিল্লায় র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর কথা রয়েছে।