সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকার মণ্ডল গ্রুপের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কাউসার হোসাইন খান (২৭) আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার ম্যাঙ্গোটেক্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিক। তার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ এলাকায়।
গুলিবিদ্ধ অন্য শ্রমিকরা হলেন: আশুলিয়ার ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক হাবীব ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো কারখানার নাজমুল হাসান। তাদের পিএমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী এক শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে কাউসার হোসাইন খান নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, সকালে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মিটিং চলছিল। এ সময় সমঝোতা না হওয়ায় শ্রমিকরা কারখানার বাইরে অবস্থান নেন। পরবর্তীতে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা সেখানে জড়ো হতে থাকেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এ সময় শ্রমিকরা র্যাব ও পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাঠিচার্জ শুরু করলে আরও উত্তেজিত হন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে গুলি চালায়। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হলে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় পিএমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জে অন্তত ২০-৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক মো. সুমন বলেন, ‘সকালে কারখানায় সবাই কাজ করছিলেন। আমাদের কারখানায় কোনো ধরনের আন্দোলন হয়নি। তবে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা কারখানার সামনে আন্দোলন শুরু করলে আমাদের শ্রমিকরা সংহতি জানিয়ে মণ্ডল গ্রুপের সামনে যান। সেখানে আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যোগ দেন। এ সময় শ্রমিকদের লাঠিচার্জ শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে গুলি ছুড়লে দুজনের পায়ে গুলি লাগে। পরে আমি তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই। এ ছাড়া প্রায় ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পিএমকে হাসপাতালের অ্যাডমিন ম্যানেজার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালে চার শ্রমিককে আহতাবস্থায় আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের পায়ে গুলি লেগেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।’
ন্যাচারাল ডেনিম কারখানার এইচআর অ্যাডমিন সবুজ হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের কারখানায় কোনো সমস্যা ছিলো না। সকাল থেকেই শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছিলেন। হঠাৎ শ্রমিকদের কাছে গুজব আসে, পাশের মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিক মারা গেছেন। এটা শুনেই সব শ্রমিক একসঙ্গে কারখানা থেকে বেরিয়ে ওই কারখানার সামনে চলে যান। পরে ওখানে কী ঘটেছে আমার জানা নেই।’
এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।