মোনাজাতের মধ্যেই দরবারে হামলা, অভিযোগ জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে
বাৎসরিক অনুষ্ঠান চলাকালীন কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রশিদিয়া দরবার শরীফে ভাঙচুরের পর আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চর সাদিপুর ইউনিয়নের সাদিপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
দরবার শরীফের লোকজন জানান, প্রায় সাত বছর ধরে হযরত খাজা শাহসুফিয়া দেওয়ান আব্দুর রশিদ আল চিশতি নিজামি (রাঃ) এর স্মরণে প্রতিবছর সাদিপুর রশিদিয়া দরবার শরীফে বাৎসরিক ওয়াজ ও মোনাজাত অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে আসছে। প্রতিবারের মতো রোববার এশার নামাজের পর শুরু হয় ওয়াজ-মাহফিল।
মাহফিলের বক্তব্য শেষে বক্তা যখন মোনাজাত শুরু করেন ঠিক তখনই এক দল নানা স্থানীয় লোক এসে দরবার ভাঙচুর করেন। এরপর আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যান। এ সময় তবারক ফেলে ভয়ে পালিয়ে যান দরবারের পরিচালক ও উপস্থিত ভক্তবৃন্দ।
এতে আতঙ্কে পালিয়েছেন রশিদিয়া দরবার শরীফের পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান। এজন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে পরিচালকের ছেলে রাসেল হোসেন ফোনে অভিযোগ করে বলেন, প্রায় সাত বছর ধরে তারা বাৎসরিক ওয়াজ ও মোনাজাতের আয়োজন করে আসছেন তারা। প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ ভক্ত উপস্থিত হয়। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে এবার মাত্র ১৫০ জনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, হুজুর ওয়াজ শেষে মোনাজাত শুরু করতে না করতেই একদল জামায়াত-শিবিরের লোকজন এসে প্রথমে ভাঙচুর করে। পরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে ভয়ে আমি ও আমার বাবাসহ উপস্থিত ভক্তরা তবারক ফেলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হই।
তিনি জানান, হামলাকারীদের নাম-পরিচয় জানেন তিনি। তবে এখনই প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে সাদিপুর বাজারের একাধিক ব্যক্তি বলেন, চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম বয়েন এবং সাদিরপুর আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আবু তালেবের নেতৃত্বে দরবার শরীফে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম বয়েন। তিনি বলেন, ‘দরবার শরীফের নামে সেখানে মাদকের আড্ডা চলে। এজন্য স্থানীয় ছেলে-পেলে তা ভেঙে দিয়েছে। আমি বাধা দিয়েছিলাম। আর সেখানে কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে চর সাদিপুর ইউনিয়ন জামায়েতের আমির আবু তালেব বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। দরবারে আগুন ও ভাঙুচরের ঘটনা ফেসবুক থেকে জেনেছি। পরে লোক মাধ্যমে শুনেছি স্থানীয় মুসল্লিরা এ কাজ করেছেন। দলের সুনাম নষ্ট করার জন্য মিথ্যা দোষারোপ করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় এ ঘটনায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খাঁ।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম বলেছেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।