রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় টিসিবির কার্ড বিতরণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুপক্ষের দুজন আহত হয়েছেন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিড়ালদহ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর প্রায় আধাঘণ্টা রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম (৪৪) এবং স্থানীয় যুবদলকর্মী মিঠুন আবু দাউদ (৩২)। ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মার সমর্থক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের কাছে টিসিবি কার্ডের ভাগ চান পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইসফা খায়রুল হক শিমুলের সমর্থক, যুবদলকর্মী মিঠুন ও তার সহযোগীরা। এ নিয়ে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রোববার দুপুর ১২টার দিকে রফিকুল ইসলামকে মহাসড়কের ওপর ঘিরে ধরে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে আহত করে শিমুলের সমর্থকরা। এ সময় স্থানীয়রা রফিকুলকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মার সমর্থকরা। শুরু হয় দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরপর রফিকুল ইসলামের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপির একাংশ রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে দুপাশে দুই কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়। শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল উপস্থিত হয়ে অবরোধ তুলে দিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বানেশ্বর ইউপির চেয়ারম্যান রাজ্জাক হোসেন দুলাল জানান, দুপুরে বিড়ালদহ মাজারের সামনে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে পেয়ে যুবদলকর্মী মিঠুন ও সীমান্তসহ ৫-৭ জন মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। তখন রফিকুল ইসলামের পক্ষের লোকজন তা প্রতিরোধ করেন। ধারালো অস্ত্রের কোপে রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ লোকজন মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মিঠুন কিছুদিন ধরেই ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের কাছে কিছু টিসিবির কার্ড দাবি করে আসছিলেন। তবে রফিকুল তা দিতে পারেননি। এর জেরে তার ওপর হামলা হয়। তখন রফিকুল ইসলামের পক্ষের বিএনপির নেতাকর্মীরা মিঠুনকেও পিটিয়ে আহত করেন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় মিঠুনের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
পুঠিয়া থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, সংঘর্ষে দুপক্ষের দুজন আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একটি পক্ষ মিনিট দশেকের মতো মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। এ ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
