মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সদরের মির্জাপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিশুটির সৎ মায়ের স্বীকারোক্তিতে চাচিসহ ২ জনকে থানায় এনেছে পুলিশ।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সময় সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শিশু রাশিদুল ফকির ওই গ্রামের রহিম ফকির ও মারিয়া আফসানা দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিলেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে আনুমানিক আড়াই বছর আগে শিশু রাশিদুলের বাবা রহিম ও মারিয়ার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। দেড় বছরের শিশু রাশিদুুলকে ফেলে তার মা ঢাকায় চলে যান। রাশিদুলের দেখভালের জন্য দুই বছর আগে পরিবারের সিদ্ধান্তে বাবা রহিম ফকির রহিমা বেগমের সঙ্গে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
আরও জানা যায়, দাদা দাদির অনুপস্থিতিতে শিশু রাশিদুলকে অমানবিক নির্যাতন চালাতো তার সৎ মা রহিমা। রহিমা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে সে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাশিদুল নিখোঁজ হলে স্থানীয়রা বাড়ি আশপাশে সব জায়গাতে মাছ ধরা জাল টেনে খোঁজ করেন। ওই দিন দিনগত রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে রাশিদুলের দাদা কেরামত ফকির বাড়ির পাশে পুকুরে খোঁজ করতে গিয়ে শিম গাছের হাঙ্গিয়ার (মাচা) নিচে তার ভাসমান মরদেহ দেখে উদ্ধার করেন।
শিশুটির অস্বাভাবিক মৃত্যুতে স্বজনদের সন্দেহের কারণে পরদিন সকালে (১৭ সেপ্টেম্বর) পুলিশে খবর দেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাশিদুলকে গলাচেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পানিতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেন সৎ মা রহিমা। এ ঘটনার সঙ্গে নিহত রাশিদুলের চাচির সম্পৃক্তার কথা তার সৎ মা জানালে, পুলিশ তাকে ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
নিহত শিশু রাশিদুলের দাদা দাদির কান্না যেন থামবার নয়। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, চার বছরের শিশু হত্যার ঘটনায় তার সৎ মা রহিমা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দোষ স্বীকার করেছেন। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটির সৎ মা ছাড়াও এ ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কিনা, তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে।