ঢাকার সড়কে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে ব্যাটারিচালিত রিকশা (অটোরিকশা)। আগে অলিগলিতে দাপট থাকলেও তা এখন রাজধানীর মূল সড়কে। বড় যানবাহনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত পাল্লা দিয়ে চলা এসব অটোরিকশার কারণে বেড়েছে দুর্ঘটনা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক পরিসংখ্যান বলছে, রাজধানীর সড়কের প্রতি বর্গকিলোমিটারে অন্তত ২ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। ঢাকায় গত দেড় মাসে অর্থাৎ আগস্ট মাস থেকে অটোরিকশা বেড়েছে ৪ লাখ। এ নিয়ে ঢাকার অলিগলিসহ মূল সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৬ লাখের বেশি অটোরিকশা।
দুর্ঘটনার পাশাপাশি এসব অটোরিকশা চার্জ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়ছে বিদ্যুৎ চুরিও। আর এজন্য ট্রাফিক পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার পাশাপাশি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ (বিআরটিএ) সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের দায় দেখছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের গবেষণা বলছে, ঢাকায় ১৮ ধরনের যানবাহনের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটারিচালিত রিকশা।পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম হাদিউজ্জামান বলেন, ‘বিআরটিএ অনেক সময় অনেক খোঁড়া যুক্তি সামনে নিয়ে আসে যে তারা রেগুলেটরি বডি, তারা এধরনের যানবাহন চলাচলের অনুমোদন দেয়নি। সেজন্য তারা নিয়ন্ত্রণও করছে না। আমি বলি, এটা বলার সুযোগ নেই। অনুমোদনের বাইরে যানবাহনগুলো যে তৈরি হচ্ছে বা সড়কে নেমে আসছে এটা নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্বও কিন্তু তাদেরই।’
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ব্যাটারিচালিত এসব অটোরিকশা বন্ধের দাবি উঠলেও তার সুরাহা হয়নি। তবে আশার খবর, এরই মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এসব রিকশার বিরুদ্ধে শুরু করেছে অভিযান।
ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) তালেবুর রহমান বলেন, ‘রাস্তার বিষয়টা তো পুলিশের একার দেখার বিষয় না। এখানে আরও অনেকগুলো সংস্থা জড়িত আছে। সিটি করপোরেশন আছে, বিআরটিএ আছে, সড়ক বিভাগ আছে। সড়কের যেকোনো বিষয়ে আমরা তাঁদের সঙ্গে সমন্বয় করে থাকি।’
ব্যাটারিচালিত রিকশা অবৈধভাবে চার্জ দিতে নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ। এবার এর বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘অবৈধ রিকশা চার্জের বিষয়ে আমরা নতুন করে আবার তথ্য নেওয়া শুরু করেছি। আমাদের জরুরি অভিযান এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি যারা লাইন চুরি করে অটোরিকশা চার্জ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে।’
ইলেকট্রিক মোটরযান নীতিমালা বাস্তবায়ন ও ব্যাটারিচালিত রিকশার বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপই নেই বিআরটিএর।