নারায়ণগঞ্জে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামির মৃত্যুদণ্ড

নারায়ণগঞ্জে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামির মৃত্যুদণ্ড

নারায়ণগঞ্জে মা ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামি আল জুবায়ের স্বপ্নীলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ইনসেটে মা ও মেয়ে।

প্রকাশিত

নারায়ণগঞ্জ শহরের ডালপট্টি এলাকায় আলোচিত মা ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি আল জুবায়ের স্বপ্নীলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।


পরে আদালতের নির্দেশে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি আল জুবায়ের স্বপ্নীলকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানান নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ।


জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আল জুবায়ের স্বপ্নীল শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা।


রোববার দুপুর দেড়টায় বিচারক রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে কান্নায় ভেঙে পড়েন মামলার বাদী রাম প্রসাদ চক্রবর্তী। স্ত্রী ও অন্তঃসত্ত্বা কন্যার নির্মম হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পেয়ে আদালতের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতায় চোখের পানিতে বুক ভাসান তিনি।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২২ সালের ১ মার্চ দুপুরে শহরের ডালপট্টি এলাকায় ‘মাতৃভবন’ নামে ছয়তলা ভবনের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে গৃহিনী রুমা চক্রবর্তী (৪৬) ও তার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ঋতু চক্রবর্তী (২২) কে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন আসামি আল জুবায়ের স্বপ্নীল। পরে সেখান থেকে পালানোর সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা বটিসহ জুবায়েরকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দেন অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। এ ঘটনায় নিহত রুমা চক্রবর্তীর স্বামী রাম প্রসাদ চক্রবর্তী বাদী হয়ে স্ত্রী ও অন্তঃসত্ত্বা একমাত্র মেয়েকে খুনের অভিযোগে জুবায়েরকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।


পরে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি জুবায়ের জানান, করোনা মহামারির সময় ব্যবসায় আর্থিক লোকসানের কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করার উদ্দেশ্যে ছয় তলা ভবনের ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেন জুবায়ের।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে। আদালত মামলাটিতে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে এই রায় দেন। আমরা আশা করব দ্রুত যেন এই রায় কার্যকর করা হয়’।


আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মাত্র দুই বছরের মধ্যে আদালত রায় দেয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন নিহতদের পরিবার। দ্রুত এ রায় কার্যকর করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান মামলার বাদী ও নিহত রুমা চক্রবর্তীর স্বামী রাম প্রসাদ চক্রবর্তী।


কান্নাবিজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী ও মেয়েকে হারিয়ে দুই বছর ধরে আমি খুব অসহায় জীবনযাপন করছি। আদালতের রায়ে আমরা খুশি আছি। তবে মাননীয় আইন উপদেষ্টার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। এটাই আমাদের একমাত্র চাওয়া’।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com