মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বনানী স্টার কাবাব শাখার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনিরুজ্জামান ওই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এর আগে স্টার কাবাবের ফেসবুক পেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে তারা দুঃখপ্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে পুনরায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে রেস্টুরেন্টটি।
এর আগে রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বনানী শাখায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও কৃষিবিদ সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলকের ডান চোখ, হাত ও পা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। কপাল ও মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন তিনি। গুরুতর আহত অলককে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি বানানী থানায় মামলা করেন।
বনানী থানায় দেয়ায় লিখিত প্রতিশ্রুতিনামায় বনানী স্টার কাবাব শাখার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, গত রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে আমাদের বনানী স্টার কাবাবে একজন সম্মানিত কাস্টমারের (গ্রাহক) সঙ্গে একজন কর্মচারীর ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য আমরা অত্যন্ত দুঃখিত ও লজ্জিত। সেইসঙ্গে আমরা আমাদের এই সম্মানিত কাস্টমারের কাছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তির আওতায় নিয়ে এসে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সার্ভিস ও খাবারের মান আরও উন্নত করব।
স্টার কাবাব কর্তৃপক্ষ আরও বলা হয়, গ্রাহক সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলককে আমরা প্রজোনীয় চিকিৎসা ব্যয় ও ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলেও তিনি তা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং ক্ষমার শর্তস্বরূপ ১ হাজার এতিমকে একবেলা বিনামূল্যে খাবার দিতে বলেন। আমরা তার শর্ত মেনে ১ হাজার এতিম শিশুকে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এতিমখানায় একবেলা উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক বলেন, স্টার কাবাব কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় এবং আমি কোনো চিকিৎসা খরচ বা ক্ষতিপূরণ না নিয়ে আমার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১ হাজার এতিম শিশুকে একবেলা খাবার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় তাদের ক্ষমা করলাম।
জানা গেছে, রোববার দুপুরে অলোক তার এক বন্ধুর সামনে পরিবেশন করা খাবারে গন্ধ পাওয়ার অভিযোগ করলে স্টার কাবাবের ম্যানেজার প্রত্যুত্তরে বলেন, জীবনে টিকিয়া খাননি আপনি। এটা এমনই হয়। এ কথা শুনে গ্রাহক প্রতিবাদ করলে আরও তিনজন গ্রাহকও একই অভিযোগ করেন।
এতে ম্যানেজার কলিংবেল চেপে সব স্টাফকে জড়ো করেন। স্টাফরা অলককে ধাক্কা দিতে দিতে দোতলা থেকে নিচতলায় নামান এবং নিচতলায় সিঁড়ির নিচে ফেলে মারধর করেন। এতে স্টার কাবাবের ১৪ থেকে ১৫ জন কর্মী হামলায় অংশ নেন। পরে আহত সাংবাদিক অলককে কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তিনি বনানী থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।