
বাংলাদেশের রাজনৈতিক মঞ্চে ফের সরগরম সংবিধান বিতর্ক। পঞ্চম সংশোধনীর আগের সংবিধান পুনর্বহালের দাবি তুলেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আজ রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের (এনসিসি) সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে স্পষ্ট ভাষায় বললেন, “রাষ্ট্রের নাম নিয়ে কোনো কারসাজি নয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশই থাকবে।"
এদিন জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। জানান, পঞ্চম সংশোধনী পূর্ববর্তী সংবিধানেই রয়েছে দেশের ভবিষ্যৎ এবং জনগণের মৌলিক অধিকারের প্রকৃত রূপরেখা।
সালাহউদ্দিনের দাবি, সংবিধানের যে অধ্যায়ে ‘মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা’র প্রস্তাব এসেছে, তা বিএনপি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে। “ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার করা উচিত”, এই দাবির পক্ষে দল একমত, বলেন তিনি। নারীর ক্ষমতায়নেও দল আগ্রহী, সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাবে সম্মতি জানায় বিএনপি।
বিএনপি আরও চায়, একজন ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, তবে একটি মেয়াদ বিরতির পর তিনি আবারও এ পদে আসতে পারবেন। অর্থাৎ, শেখ হাসিনা বা ভবিষ্যতের কাউকে নিয়েও দলের অবস্থান স্পষ্ট: দ্বিতীয় মেয়াদের পর চাইলে বিরতি দিয়ে আবার আসতে পারবেন, কিন্তু টানা নয়।
কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে দলটি অনড়। সালাহউদ্দিন বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই সম্ভব।” প্রস্তাবিত এই সরকার থাকবে ৩ মাস, যার অধীনে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। সংসদ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সবকিছুই হবে ৫ বছর।
দলীয় মনোনয়ন ও সাংবিধানিক কাঠামো, এসব বিষয়ে এখনই মৌলিক পরিবর্তন চায় না বিএনপি, তবে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ চাইলে সংস্কার আনতে পারবে।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানান, আলোচনা ভালোই এগোচ্ছে। “জাতীয় স্বার্থে সর্বগ্রহণযোগ্য সমাধান আসবে বলেই আমরা আশাবাদী,” বললেন তিনি।