মাগুরার শালিখা উপজেলার বরয়চারা গ্রামের অভয়াচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিশির সরকার। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদারের পিএ। ২০১১ সালে তিনি ওই বিদ্যালয়ে যোগ দেন। তবে ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের এই পর্যন্ত এক দিনের জন্যও তিনি স্কুলে যাননি।
অথচ এ ১৩ বছরে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষক হিসেবে বেতন নিয়েছেন। এ ছাড়াও নিজ গ্রাম, জেলা শহর, রাজধানী ঢাকা এমনকি ভারতে তার বাড়ি রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। শিশির সরকার মাগুরা সদর উপজেলার আসবা গ্রামের যুগল সরকারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক শিশির সরকার। স্কুলে পাঠদানের বদলে পুরো সময়জুড়ে তিনি ছিলেন সাবেক এমপি ও পরে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর পিএ। এ সময় স্কুলে গিয়ে এক দিনে তিনি পুরো মাসের স্বাক্ষর করে আসতেন। এরপর মাস শেষে বেতন তুলে নিতেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এসব কাজ করতেন। অথচ শিক্ষক হিসেবে তাকে ক্লাসে দেখেননি বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। এখন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মমতা শিকদার বলেন, সহকারী শিক্ষক শিশির সরকারের স্কুলে না এসে বেতন তুলে নেওয়ার বিষয়টা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। সে মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্যের পিএ ছিল। তাকে স্কুলে আনার ক্ষমতা আমার ছিল না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমি অন্যভাবে জেনেছি। তবে ওই স্কুল থেকে আমাকে জানানো হয়নি। এ ছাড়া ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটিকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে আমার কিছু করার নেই।
এদিকে শিশির সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ বলেন, এটা অবশ্যই ন্যক্কারজনক ঘটনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।