গত ২২ আগস্ট রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত অলিও ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলে ভুক্তভোগীকে নিয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া
চলতি বছরের ২২ আগস্ট রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত অলিও ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলে মোহাম্মদপুরের ভুক্তভোগী ১৬ বছরে বয়সি সেই কিশোরীকে নিয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।
ওই কিশোরীর অভিযোগ, বেশ কয়েকদিন আগে প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। পরে খাবার হোটেলে যাওয়ার কথা বলে তাকে নেয়া হয় একটি আবাসিক হোটেলে। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল প্রেমিকের পাঁচ বন্ধু। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পরিকল্পিতভাবে ছয়জন মিলে ধর্ষণ করেন তাকে। গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয় ভিডিও।
এই ঘটনার পর থেকে দফায় দফায় নির্যাতনের শিকার হন তিনি। কথিত প্রেমিক ও তার বন্ধুদের প্রস্তাবে রাজি না হলেই দেয়া হতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি। সবশেষ এই তরুণীকে নেয়া হয় পান্থপথের সেই হোটেলটিতে। অভিযান চালিয়ে হোটেলটিতে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রমাণও মেলে। কর্মচারীরা জানান, বিভিন্ন অভিযোগে কয়েক মাস আগে হোটেলটি সিলগালা করে দেয়া হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘিরে ৫ আগস্টের পর গোটা দেশে পুলিশ অনেকটা নিষ্ক্রিয় থাকলেও এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয় কলাবাগান থানা। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতাও পান তারা। তবে এর পর থেকেই বিপত্তির শুরু, হঠাৎই লাপাত্তা ভুক্তভোগী নিজেই।
ঠিক কি কারণে ভুক্তভোগী আর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি তার উত্তর এখনো অজানা। তবে তার এই অনুপস্থিতির সুযোগে নাকের ডগায় থেকেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে অপরাধীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনার দায় এড়াতে পারে না রাষ্ট্র কিংবা সমাজ।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক সময় সংবাদকে বলেন,
এই ঘটনাগুলো জানাজানি হলে ভুক্তভোগীকে নিয়ে সমাজে এক ধরনের কলঙ্কজনক অধ্যায় বা আলোচনা হয়। মামলা থেকে শুরু করে বিচার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা বা উদ্যোগগুলো পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়, সেক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করাসহ বিচারিক ও মৌলিক অধিকারের প্রশ্নে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তারাও কিন্তু নানাভাবে পুলিশের এ কার্যক্রমে আরও জোরালোভাবে সহযোগিতা করতে পারে।
বহু আগেই সিলগালা করা হোটেলটি অবৈধভাবে আবারও চালু হয়েছে। এমন গুরুতর অভিযোগ থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নাকের ডগায় দিব্বি চলছে হোটেল অলিও ইন্টারনেশনাল।