
বুধবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রসমাজ’-এর ব্যানারে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে কানুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। ছবি-সংগৃহিত।
জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্চিত করার পর এবারে কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত দাবী করে তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের আহবান জানানো হয়েছে।
বুধবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রসমাজ’-এর ব্যানারে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে কানুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। ছাত্র-জনতার গণভ্যুত্থানে জুলাই-আগস্ট হত্যাণ্ডের বিচারের দাবিতে এদিন বিকেলে ওই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, কানু হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি। এখনো প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করছে না। একটি জুতার মালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আব্দুল হাই কানু দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। কানু মুক্তিযোদ্ধার প্রেরণাকে কেন্দ্র করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
কানুকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জোর দাবি জানিয়ে সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, কানুর ঘটনাকে পুঁজি করে একটি মহল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ছাত্র-জনতা তা হতে দেবে না।
সমাবেশ ও মিছিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন মজুমদার, সদস্য জাহিদুল ইসলাম, নাসিম মিয়াজি, আবুল হাসনাত সিয়ামসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বর্পূণ স্থান প্রদক্ষিণ শেষে হায়দার শপিং কমপ্লেক্সর সামনে সমাবেশ করে।
১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করলেন কানু
এদিকে, জুতার মালা পরিয়ে এলাকাছাড়া করার ঘটনায় মামলা করেছনে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু।
বুধবার সন্ধ্যায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ২২ জনকে আসামি করে তিনি ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা রুজু করেছেন।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তারু উজ জামান সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু নিজে উপস্থিত হয়ে মামলা করেছেন। ওসি বলেন, ‘আমরা মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।’
এজাহারে কানু বলেছেন, গত ২২ ডিসেম্বর নিজ গ্রাম বাতিসার লুদিয়ারায় গেলে জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেমের নেতৃত্বে অন্য অভিযুক্তরা তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে যান। সেখানে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা কানুকে মারধর করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে এলাকাছাড়া করেন। এছাড়াও ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন অভিযুক্তরা। এতে তার সামাজিকভাবে ১০০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে।
মামলায় জামায়াতের বহিষ্কৃত সমর্থক আবুল হাশেমকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত আরেক সমর্থক অহিদুর রহমানকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।