এক নজরে ফরিদপুর জেলা

এক নজরে ফরিদপুর জেলা
প্রকাশিত

ঢাকা থেকে ১৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ফরিদপুর জেলা, বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী জেলা। ব্রিটিশ শাসনামলে এটি ‘ফতেহাবাদ’ নামে পরিচিত ছিল। পরে সুফি সাধক শাহ ফরিদ (রহ.)-এর নামানুসারে ফরিদপুর নামকরণ করা হয়। ১৭৮৬ সালে এটি "জালালপুর" নামে প্রতিষ্ঠিত হলেও, ১৮০৭ সালে ঢাকা থেকে বিভক্ত হয়ে ফরিদপুর জেলা হিসেবে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়। তৎকালীন ফরিদপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল গোয়ালন্দ, ফরিদপুর সদর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ মহকুমা, যা বর্তমানে পাঁচটি জেলায় পরিণত হয়েছে।

<div class="paragraphs"><p>পাখির চোখে ফরিদপুর শহর; ছবি: মেট্রো টিভি</p></div>

পাখির চোখে ফরিদপুর শহর; ছবি: মেট্রো টিভি

প্রশাসনিক কাঠামো ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য

ফরিদপুর জেলা বর্তমানে ২,০৭২.৭২ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এর সীমানা ঘিরে রয়েছে বাংলাদেশের দুটি প্রধান নদী, পদ্মা ও মেঘনা, যাদের শাখা নদীগুলো (ভুবনেশ্বর, আরিয়াল খাঁ, নীলখীর খাল) জেলার অভ্যন্তরে ছড়িয়ে আছে। প্রশাসনিকভাবে ফরিদপুর জেলায় রয়েছে ৪টি সংসদীয় আসন, ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৮১টি ইউনিয়ন এবং ১,৮৮৭টি গ্রাম।

ফরিদপুরের গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য

ফরিদপুর মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছে। এই জেলার কৃতী সন্তান, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার। ফরিদপুর পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের জন্মভূমি, যেখানে অবস্থিত জসিম উদ্দিন যাদুঘর। কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে তার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে, যার পাশেই রয়েছে তার সমাধি।

<div class="paragraphs"><p>পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের বাড়ী; ছবি: মেট্টো টিভি</p></div>

পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের বাড়ী; ছবি: মেট্টো টিভি

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

ফরিদপুর জেলার শিক্ষার হার ৪৩.৯৫%। শিক্ষা বিস্তারে এখানে রয়েছে ৭৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৯৫টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫২টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩৯টি মাদ্রাসা, ৩১টি মহাবিদ্যালয় এবং একটি মেডিকেল কলেজসহ বেশ কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্যসেবার জন্য ফরিদপুরে ৮৮টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে, যা জেলার মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

<div class="paragraphs"><p>এম. এন. একাডেমী (মডেল স্কুল), নগরকান্দা, ফরিদপুর; ছবি: মেট্টো টিভি</p></div>

এম. এন. একাডেমী (মডেল স্কুল), নগরকান্দা, ফরিদপুর; ছবি: মেট্টো টিভি

অর্থনীতি ও শিল্প

ফরিদপুর জেলার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি ও শিল্প। এখানে উৎপাদিত পাট, মসুর ডাল এবং পেঁয়াজ দেশের শীর্ষস্থানীয় কৃষিপণ্য হিসেবে পরিচিত। এছাড়া শীতকালে ফরিদপুরের খেজুর রস ও খাঁটি গুড়ের খ্যাতি দেশজুড়ে। শিল্পখাতে রয়েছে চিনিকল, পাইপ ফ্যাক্টরি, টেক্সটাইল মিল, জুট মিলসহ বিভিন্ন কুটির ও মাঝারি শিল্প।

<div class="paragraphs"><p>ফরিদপুরের হস্ত শিল্প; ছবি: মেট্টো টিভি</p></div>

ফরিদপুরের হস্ত শিল্প; ছবি: মেট্টো টিভি

যোগাযোগ ব্যবস্থা

ফরিদপুর জেলা দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জেলার অভ্যন্তরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক রয়েছে, যা সারা দেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করে।

<div class="paragraphs"><p>ভাঙ্গা গোল চত্বর; ছবি: মেট্টো টিভি</p></div>

ভাঙ্গা গোল চত্বর; ছবি: মেট্টো টিভি

ঐতিহ্য ও উন্নয়নের সমন্বয়

ফরিদপুর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও অর্থনীতির অপূর্ব সংমিশ্রণ। একদিকে যেমন এটি বহু গুণী ব্যক্তির জন্মস্থান, তেমনি কৃষি ও শিল্পে সমৃদ্ধ একটি জেলা। এ জেলার মানুষ তাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, যা ফরিদপুরকে একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চলে পরিণত করেছে।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com