দেশ

শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য আমাদের সোচ্চার হতে হবে: তাসলিমা আখতার

ফিলিস্তিনমুখী অধিকার কর্মীদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেছেন, ফিলিস্তিনমুখী ফ্রিডম ফ্লোটিলা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অপহৃত শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে। ফ্রিডম ফ্লোটিলায় যারা ছিলেন তাদেরকে অপহরণ করে কীভাবে কোথায় রাখা হয়েছে আমরা জানি না। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ ভূমিকা নিতে হবে।

ফিলিস্তিনমুখী গ্লোবাল ফ্লোটিলা থেকে অধিকার কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ও ফিলিস্তিনে জায়নবাদী আগ্রাসনের প্রতিবাদে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। আজ ০৮ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে ঢাকার ইস্কাটনের বিয়ামের গলির মাঠে এই সমাবেশ আয়োজিত হয়।

তাসলিমা আখতার বলেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যায় এর মধ্যেই ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০ হাজারের বেশি শিশুকে হারিয়েছে গাজাবাসী। লক্ষ লক্ষ মানুষ উদবাস্তু হয়ে গেছে। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে, শিশুদের জীবন ধ্বংস হচ্ছে, হাসপাতাল, ঘরবাড়ি ধ্বংস হচ্ছে। সেই সময়ে শহিদুল আলম এবং রুহি লোরেনের মতো সারা বিশ্ব থেকে মানুষেরা গ্লোবাল ফ্লোটিলা নিয়ে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। তাদেরকে অপহরণের এই ঘটনা মানবতার কণ্ঠরোধ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, এর আগে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার শহিদুল আলমকে কারাবন্দী করে নির্যাতন করেছিল। এখনও ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধি হয়ে তিনি ফ্রিডম ফ্লোটিলায় গিয়েছেন। তার মুক্তির দাবি সারা বাংলাদেশের মানুষের দাবি।

তাসলিমা আখতার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের ইসরায়েলপন্থী সরকারগুলো ভান করছে তারা যুদ্ধ বন্ধ করতে চায়। কিন্তু বাস্তবে তারা ফিলিস্তিনের মানুষের স্বাধীনতার দাবিকে দমিয়ে রাখতে চায়। ফিলিস্তিনের মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তির দাবির পক্ষে আমাদের আওয়াজ তোলাটা আমাদের দায়িত্ব। সারা বিশ্বের মানুষের নেমে আসা দরকার আজকে ফিলিস্তিনের জন্য।

গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া বলেন, সারা পৃথিবীতে শ্রমিকসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ রাস্তায় নেমেছে ফিলিস্তিনের পক্ষে। সারা বিশ্বের মানুষের সম্মিলিত প্রতিবাদ আজ অত্যন্ত জরুরি ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য। আমরা শহিদুল আলমের প্রতিবাদের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনিস্টিউটের শিক্ষক নাসিমা, সমগীতের ঢাকা অঞ্চলের সাবেক সভাপতি রেবেকা নীলা, প্রতিবেশ আন্দোলনের সংগঠক আবদুল্লাহ নাদভী, গণসংহতি আন্দোলনের সাংগঠনিক উপকমিটির সদস্য সাইফুল্লাহ সিদ্দিক রুমন, ইস্কাটন অঞ্চলের সংগঠক আমিনুল ইসলাম, হাতিরঝিল অঞ্চলের সংগঠক আবদুল কাদের, মিরপুর অঞ্চলের সংগঠক লুতফুন্নাহার সুমনা, জাতীয় পরিষদের সদস্য আশরাফুল আলম সোহেল, ময়মনসিংহ ভালুকার সংগঠক গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব) মোঃ খালেদ হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক কুমার রায়, অ্যাকটিভিস্ট-শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহীম চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক মো. সেলিমুজ্জামান, সদস্য সচিব আলিফ দেওয়ান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি প্রবীর সাহা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইরান সহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, অ্যাক্টিভিস্ট, শিল্পী এবং গণসংহতি আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের কর্মী-সংগঠকবৃন্দ।

সমাবেশ শেষে অংশগ্রহণকারীরা একটি প্রতিবাদি মিছিল নিয়ে ইস্কাটন-মগবাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করেন।