ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৫০টি থানায় একযোগে বিশেষ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। হঠাৎ এই মহড়া ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল ও নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ডিএমপি সদর দপ্তর জানিয়েছে, এটি নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়ার অংশ।
তবে পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপর দিকে, ১১ নভেম্বর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াত ইসলামী। এদিন রাজধানীতে ব্যাপক নেতা-কর্মীদের সমাগম করানোর প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ সদস্যদের বাড়তি উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। রায়ট গিয়ার, হেলমেট, বডি আর্মারসহ পূর্ণ প্রস্তুতিতে তাঁরা অবস্থান নেন। এ সময় পথচারীদের সন্দেহ হলে ব্যাগ তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়। সন্দেহজনক যানবাহনও থামিয়ে তল্লাশি করা হয়।
ডিএমপির কয়েকজন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ‘ডিসপ্লে এক্সারসাইজ’ চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এটি নিয়মিত মহড়া, এর সঙ্গে অন্য কোনো বিশেষ ঘটনাবলির সম্পৃক্ততা নেই।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘এটা আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়া। ফোর্স মোবিলাইজেশনের একটি অংশ, যা নিয়মিতই হয়ে থাকে।’
কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রস্তুতি কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। এটি আমাদের রুটিন কার্যক্রমের অংশ।’
‘ফোর্স মোবিলাইজেশন’ প্রক্রিয়ায় সাধারণত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বাহিনীকে একত্রিত করা, প্রস্তুত রাখা ও মোতায়েনের অনুশীলন করা হয়। এতে রিজার্ভ ফোর্স সক্রিয় করা, জনবল ও সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখাসহ নানা অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকে।
সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ও চার্জ পয়েন্টের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাত-দিন ঝটিকা মিছিল করছে। এ ছাড়া ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশ বাড়তি সতর্ক অবস্থানে থাকলেও—পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।