নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির লক্ষ্যে আত্মগোপনে যাওয়া মো. ছাইদুল ইসলাম ওরফে সাইফুলকে উদ্ধার ও নিখোঁজের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) নীলফামারী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এ.বি.এম. ফয়জুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে স্ত্রীকে ইপিজেড থেকে আনার কথা বলে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে মো. ছাইদুল ইসলাম ওরফে সাইফুল (২৫) নিখোঁজ হয়েছেন অভিযোগ করে তার বাবা মো. শফিকুল ইসলাম শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নীলফামারী সদর থানায় জিডি করেন। উক্ত জিডি’র প্রেক্ষিতে নিখোঁজ সাইদুলকে উদ্ধারে নীলফামারী জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত ও অপরাধ গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে নিখোঁজ ছাইদুলকে শনিবার সকালে সৈয়দপুর থানাধীন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সাথী ফার্মেসীর সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর নীলফামারী সদর হাসপাতালে তার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় এবং অজ্ঞান হওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
এতে আরও বলা হয়েছে, সাইদুলকে উদ্ধারের পর তার নিখোঁখের বিষয়ে বিস্তৃত তদন্ত, মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট, অপরাধ গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে জানা যায়, ইপিজেডে শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর জন্য কতিপয় ব্যক্তির সঙ্গে যোগসাজশ করে তিনি নিজে আত্মগোপনে চলে যান। অন্যান্যদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ইপিজেডের এভারগ্রীন কোম্পানির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য কয়েক দফায় কোম্পানির বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেন এবং ৫ হাজার টাকা নেন। উদ্ধারের পর সকল স্বাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করলে ছাইদুল নিজে আত্মগোপনের বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ও দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র করে বহিঃবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজের বিষয়টি প্রচারসহ চাঁদা দাবি ও চাঁদা গ্রহণ করায় তাকে নীলফামারী জেলা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিখোঁজ ছাইদুল ওরফে সাইফুল উত্তরা ইপিজেড নীলফামারীর এভারগ্রীন কোম্পানির শ্রমিক। গত ২ সেপ্টেম্বর উত্তরা ইপিজেডে এভারগ্রীন কোম্পানির শ্রমিক অসন্তোষের ফলে মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। বিরোধ চলাকালে সাইফুল শ্রমিকদের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়ে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মধ্যে নানান দাবি নিয়ে দর কষাকষি করেন এবং বিভিন্ন কৌশলে ইপিজেডের কর্ম পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।