দেশ

খুলনায় আ.লীগ-ছাত্রলীগের মিছিল, আটক ২৫ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ একদিনে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে খুলনায় আলাদা ৪টি স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছে।

রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে মিছিলগুলো করা হয়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড সিপি) মোহা. আহসান হাবীব তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খুলনায় প্রথম প্রকাশ্যে মিছিল করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। হঠাৎ নগরীতে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের একের পর এক মিছিলে প্রশাসনের দুর্বলতার অভিযোগ উঠেছে।

নগরীতে দলটির মিছিলের সূত্রপাত হয় জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে। সেখানে একটি মিছিল বের করে কয়েক মিনিটের মধ্যে শেষ হয়। মিছিলের ব্যানারে আয়োজক হিসেবে লেখা ছিল ‌‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখা’। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের খুলনা জেলা শাখার একাধিক নেতার ফেসবুক আইডি থেকে ওই মিছিলের ভিডিওটি পোস্ট করা হয়।

একইদিন নগরীর খালিশপুর ও দৌলতপুরেও ঝটিকা মিছিল বের হয়েছে বলে জানা গেছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের হাতে কালো পতাকা ছিল। তারা ‘জয় বাংলা’ সহ অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেন।

এদিকে নগরীর বয়রা জলিল সরণিতেও মিছিল হয়েছে। সেখানে মিছিল শেষে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। তার নাম ওয়ালিদ হাসান ইমন (২৪)। আটককৃত ওয়ালিদ খালিশপুর এলাকার আফজালের মোড়ের বাসিন্দা। এ সময় পুলিশ তার কাছ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড শাখার একটি কমিটির তালিকা উদ্ধার করা হয়।

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলটিকে প্রশাসনের দুর্বলতা বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা।

রবিবার বিকালে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মিছিলকারীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এনসিপি খুলনার মুখ্য সমন্বয়ক আহম্মদ হামীম রাহাত ও ডা. আব্দুল্লাহ চৌধুরী।

এদিকে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খুলনা বিএনপি।

রবিবার খুলনা বিএনপি মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো বিবৃতিতে নেতারা বলেন, হঠাৎ করে নগরের একাধিক জায়গায় আওয়ামী লীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিলের নেপথ্যে কারা মদদ দিচ্ছে এবং কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তারা মাঠে নামছেন মোটা দাগে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাজারও শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আবার ফিরে আসার জানান দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

বিবৃতিতে নেতারা পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসরদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে এবং মিছিলকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, যারাই দেশে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিষিদ্ধ, সন্ত্রাসী, ফ্যাসিস্ট সংগঠনের যারাই বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করবে, এমনকি তাদের যারা পৃষ্ঠপোষকতা করবে তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে।