অর্থনীতি

দুই বছরে সর্বোচ্চ দরপতনের পথে তেল বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সামান্য বাড়লেও চলতি সপ্তাহে এটি গত দুই বছরে সবচেয়ে বড় পতনের মুখে পড়েছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষে সরবরাহ বিঘ্নের আশঙ্কা কেটে যাওয়ায় বাজার থেকে ঝুঁকিভিত্তিক বাড়তি দাম সম্পূর্ণভাবে মুছে গেছে।

শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫৪ সেন্ট বা ০.৮ শতাংশ বেড়েছে দাঁড়িয়েছে ৬৮.২৬ ডলারে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম ৬০ সেন্ট বা প্রায় ০.৯ শতাংশ বেড়েছে দাঁড়িয়েছে ৬৫.৮৩ ডলারে।

১৩ জুন ইসরায়েল যখন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তখন থেকে যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত ১২ দিনে ব্রেন্টের দাম সাময়িকভাবে ৮০ ডলারের ওপরে উঠলেও পরে তা নেমে আসে ৬৭ ডলারে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়ার পর।

ফলে এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে তেলের দরপতনের হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের মার্চের পর সর্বোচ্চ।

জ্বালানি তেল বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজার এখন আগের মতো ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় না দুলে, চাহিদা ও সরবরাহভিত্তিক বাস্তবতায় ফিরে এসেছে। নরওয়েভিত্তিক গবেষণা সংস্থা রিস্ট্যাডের বিশ্লেষক জানিভ শাহ বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগের সংঘাত ভিত্তিক ঝুঁকির প্রভাব এখন বাজার থেকে পুরোপুরি মিলিয়ে গেছে।’

তেলের ভবিষ্যৎ দামের গতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে আসন্ন ওপেক+ বৈঠক, যা ৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে আগস্ট মাসের উৎপাদন নীতিনির্ধারণ হবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগ প্রকাশিত তথ্য বলছে, দেশটিতে পরিশোধন কার্যক্রম ও চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি তেল ও জ্বালানির মজুদও কমেছে। ইউরোপের আমস্টারডাম-রটারডাম-অ্যান্টওয়ার্প (এআরএ) অঞ্চলেও গ্যাস অয়েলের মজুদ এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। সিঙ্গাপুরেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে।

চীনেও ইরানি তেলের আমদানি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। জুনের প্রথম ২০ দিনে দেশটি দৈনিক ১৮ লাখ ব্যারেলেরও বেশি তেল আমদানি করেছে, যা প্রতিষ্ঠান ভোরটেক্সা’র তথ্য অনুযায়ী রেকর্ড পরিমাণ।

বিশ্ববাজারে সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক হিসেবে চীনের এমন উচ্চহারে তেল কেনা বিশ্বজুড়ে সরবরাহ ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

খবর -রয়টার্স