ফাইল ছবি
ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ কিছুটা কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) স্বর্ণের দাম এক শতাংশের বেশি কমে গেছে, যা গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২৪ জুন) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩২২ দশমিক ০৯ ডলারে। যা ১১ জুনের পর সর্বনিম্ন।
আর ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে কমেছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। বেচাকেনা হচ্ছে ৩ হাজার ৩৩৬ ডলারে।
বাজার বিশ্লেষক রিকার্ডো ইভাঞ্জেলিস্টা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন। এতে স্বর্ণের দাম কমেছে। তবে তিনি মনে করেন, স্বর্ণের দাম খুব সহজে ৩ হাজার ডলারের নিচে নামবে না। বরং ৩ হাজার ৩০০ ডলারে এটি একটি শক্তিশালী সমর্থন পাবে।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর বিশ্ব শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, অপরিশোধিত তেলের দামও কমেছে। বিনিয়োগকারীদের ধারণা, এই যুদ্ধবিরতি হয়তো চলমান সংঘাতের সমাপ্তির দিকে যেতে পারে।
তবে সবকিছু এখনও অনিশ্চিত। মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাবে তিনি তেহরানে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল আজ হাউস ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিটির সামনে বক্তব্য দেবেন। বিনিয়োগকারীরা এখন তার বক্তব্যের অপেক্ষায় আছেন। এখন পর্যন্ত পাওয়েল সুদের হার কমানোর বিষয়ে খুব সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
সুদের হার কমলে সাধারণত স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ বাড়ে, কারণ এটি সুদবিহীন সম্পদ। বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, ফেড এই বছরের মধ্যে প্রায় ৫৭ বেসিস পয়েন্ট সুদ হার কমাতে পারে।
এএনজেড ব্যাংক এক বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ৩ হাজার ৬০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। তবে ২০২৬ সাল নাগাদ অর্থনীতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য স্থিতিশীল হলে দাম আবার কমে আসতে পারে।
এদিকে বিশ্ববাজারে দাম কমায় দেশের বাজারেও কমতে পারে স্বর্ণের দাম। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববাজারে দাম কমলে এর প্রভাব পড়ে দেশের বাজারেও। তাই যে কোনো সময় দেশের বাজারেও দাম কমানো হতে পারে।
দেশের বাজারে সবশেষ গত ১৪ জুন স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেদিন ভরিতে ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়েছে সংগঠনটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।