শীত নামলেই অনেকের জন্য শুরু হয় মাথাব্যথা, নাক বন্ধ, গলায় চাপ—মৌসুমি সাইনাসের ক্লান্তিকর উপসর্গ। সাইনাস হল মাথার হাড়ের ভেতরে থাকা বায়ুচক্রের খালি স্থান, যা নাক ও শ্বাসনালীর সাথে সংযুক্ত। শীতে ঠান্ডা বাতাস, শুকনো ঘর বা ধুলাবালুর সংস্পর্শে সাইনাস সহজেই প্রদাহিত হয়ে ওঠে।
শীতে সাইনাস সমস্যা কেন বেড়ে যায়?
ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস: সাইনাসের লাইনিং শুষ্ক হয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
ধুলো ও দূষণ: সিটি বা গ্রাম উভয়ই ধুলোবালু সাইনাস ব্লক করে।
ঠান্ডা পানীয় বা হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তন: হঠাৎ গরম-ঠান্ডার সংস্পর্শে সাইনাস জ্বালা বা নাক বন্ধ হতে পারে।
ইনফেকশন: সাধারণ সর্দি-কাশি ভাইরাস সাইনাসে ছড়িয়ে ব্যথা ও চাপ সৃষ্টি করে।
লক্ষণ: কখন বুঝবেন সাইনাস সমস্যা চলছে
নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে স্রাব
নাকের পাশে চাপ বা গলায় ভার অনুভূত হওয়া
মাথা, কপাল বা চোখের পিছনে ব্যথা
গলায় শুকনো ভাব বা খুসখুসানি
ঘুমে সমস্যা বা ঘুমের সময় নাক বন্ধ হওয়া
সতর্কতার সংকেত: ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত
১০ দিন বা তার বেশি সাইনাসের উপসর্গ থাকলে
নাক দিয়ে রক্ত বা মলমিশ্রিত স্রাব
প্রচণ্ড মাথাব্যথা বা চোখের চারপাশে ফোলা
জ্বর বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা
প্রতিকার ও জীবনধারার পরিবর্তন
ঘরে সহজ উপায়-
বাষ্প গ্রহণ: গরম পানি থেকে বাষ্প নাক দিয়ে নেওয়া সাইনাস খোলা রাখতে সাহায্য করে।
নাক ধোয়া (নেটি পট/নাজাল ওয়াশ): লবণ পানি ব্যবহার করে সাইনাস পরিষ্কার করা।
উষ্ণ কম্প্রেস: নাক ও কপালে হালকা গরম সেঁক ব্যথা কমায়।
খাবার ও পানীয়-
পর্যাপ্ত পানি পান, যা স্রাব পাতলা রাখে
হালকা মসলা ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার
ঠান্ডা পানীয় ও আইসক্রিম সীমিত করা
সাধারণ সতর্কতা
ধুলো ও ধোঁয়া এড়ানো
ঘরে আর্দ্রতা বজায় রাখা (হিউমিডিফায়ার ব্যবহার)
শীতল বাতাসে হঠাৎ বের হওয়া এড়ানো
চূড়ান্ত পরামর্শ
শীতকালে সাইনাসের সমস্যা একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর অসুখ। নিয়মিত সুরক্ষা, ঘরের পরিবেশ ঠিক রাখা, প্রয়োজনমতো ডাক্তার পরামর্শ—এসবের মাধ্যমে সাইনাসের উপসর্গ কমানো সম্ভব। হঠাৎ ও তীব্র উপসর্গ দেখা দিলে, নিজে হোম রেমেডি নয়, ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।