আন্তর্জাতিক

পরবর্তী বৈঠক হবে জেলেনস্কি ও পুতিনের মধ্যে: ট্রাম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন সংঘাত অবসানে পরবর্তী শীর্ষ-স্তরের আলোচনা আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন তিনি, যার লক্ষ্য হলো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে একই টেবিলে বসানো।

সংঘাতের সম্ভাব্য নিষ্পত্তি নিয়ে আলোচনার জন্য ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় পুতিনের সাথে বৈঠকের আগে সোমবার (১১ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তার কথায়, ‘পরবর্তী বৈঠক হবে জেলেনস্কি ও পুতিনের মধ্যে, অথবা জেলেনস্কি, পুতিন ও আমার মধ্যে। যদি তাদের প্রয়োজন হয় তবে আমি সেখানে থাকব।’

ট্রাম্প আরও বলেন, আগামী শুক্রবার পুতিনের সাথে তার বৈঠকে জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পুতিনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ট্রাম্প আরও বলেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ন্যায্য প্রস্তাব এলে সমঝোতার পথ খোঁজা হবে, নতুবা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দেবেন তিনি। শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেই থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফোনালাপে মোদিকে মস্কোর সঙ্গে জ্বালানি ব্যবসা সীমিত করার আহবান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এর মধ্যেই যুদ্ধের ময়দানে অব্যাহত আছে রাশিয়া-ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি লড়াই।

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক ঘিরে বিশ্ব-রাজনীতিতে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। ইউক্রেন যুদ্ধবন্ধের কৃতিত্ব ট্রাম্পের ঝুঁলিতে যাবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা প্রশ্ন। স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসের এক ব্রিফিংএ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, আলাস্কায় আসন্ন বৈঠক হবে মূলত এক প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা।

রুশ প্রেসিডেন্ট তাকে আলোচনায় যুক্ত হতে বলেছেন বলেও জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, পুতিনকে সরাসরি যুদ্ধ শেষ করার আহবান জানাবেন। তবে অতীত অভিজ্ঞতার কারণে হতাশ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি।

ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কোনো একক চুক্তি করবেন না। বরং বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে কথা বলবেন। ন্যায্য প্রস্তাব এলে সমঝোতার পথ খোঁজা হবে, নতুবা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দেবেন তিনি।

ট্রাম্পের কথায়, ‘আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করব এবং যুদ্ধকে ঘিরে তার পরিকল্পনা বোঝার চেষ্টা করব। আর যদি সেটা ন্যায্য চুক্তি হয়, আমি তা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকেও জানাব। হয় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেব আর না হলে শান্তিচুক্তির বিষয়ে জানাব।’

এদিকে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া নতুন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার ভাষায়, ‘যে দেশ শান্তির প্রস্তুতি নেয়, সে দেশ এভাবে সেনা মোতায়েন করে না। জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, পুতিন আসন্ন বৈঠককে ব্যক্তিগত বিজয় হিসেবে দেখাতে চান, বাস্তবে যুদ্ধ থামানোর কোনো ইঙ্গিত নেই।’

এর মধ্যেই জেলেনস্কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ আলোচনা করেন। এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তিপ্রতিষ্ঠার কথা জানান। তবে জেলেনস্কি রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি সীমিত করার আহ্বান জানান, যাতে যুদ্ধ চালানোর অর্থনৈতিক সক্ষমতা কমে যায়।

যুদ্ধক্ষেত্রে এইদিনও সক্রিয় লড়াইয়ের খবর আসে। রাশিয়া দাবি করেছে, দোনেৎস্কে আরও একটি বসতি দখল করেছে তারা। ইউক্রেন জানিয়েছে, গেল একদিনে রুশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফ্রন্টলাইনে ১৩৭ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা। একই সঙ্গে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক শিল্প কেন্দ্র আরজামাসে ড্রোন হামলা চালিয়েছে কিয়েভ।