আন্তর্জাতিক

তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘লাল রেখা’ সতর্কতা চীনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

তাইওয়ানকে রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) একাধিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে চীন। বেইজিং প্রকাশিত নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি প্রতিরক্ষা কোম্পানির নাম রয়েছে, যার মধ্যে বোয়িং (Boeing) ও নর্থরপ গ্রুম্যান (Northrop Grumman) অন্যতম। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১০ জন শীর্ষ নির্বাহীকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

চীন তাইওয়ান ইস্যুকে “চীনের মূল স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দু” হিসেবে উল্লেখ করে সতর্ক করে বলেছে, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি হচ্ছে “প্রথম লাল রেখা”, যা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে,

“আমরা আবারও জোর দিয়ে বলছি, তাইওয়ান প্রশ্নটি চীনের মূল স্বার্থের একেবারে কেন্দ্রে অবস্থান করছে এবং এটি চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের প্রথম লাল রেখা, যা কখনোই অতিক্রম করা যাবে না। যে কেউ এই রেখা অতিক্রম করে তাইওয়ান প্রশ্নে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করলে, তাকে চীনের দৃঢ় প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে জড়িত যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি তাদের এই অন্যায় কাজের মূল্য দিতে বাধ্য হবে।

“কোনো দেশ বা শক্তি যেন চীনা সরকার ও জনগণের জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার দৃঢ় সংকল্প, ইচ্ছাশক্তি ও সক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন না করে,” বলা হয় বিবৃতিতে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন তাইওয়ানের সঙ্গে এককালীন, ইতিহাসের সর্ববৃহৎ অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা দেয়। আটটি নতুন প্রতিরক্ষা প্যাকেজের আওতায় এ চুক্তির মোট মূল্য ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) যেসব অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে-

  • ৬০টি এম১০৭এ৭ স্বচালিত হাউইটজার ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামের জন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি,

  • ৮২টি এম১৪২ হিমার্স (HIMARS) মাল্টিপল রকেট লঞ্চার,

  • ৪২০টি আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (ATACMS),

  • এক বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ALTIUS টিউব-লঞ্চড লয়টারিং ড্রোন মিউনিশন,

  • ৩৫৩ মিলিয়ন ডলারের টো (TOW) ক্ষেপণাস্ত্র।

এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এসব কোম্পানির চীনের ভেতরে থাকা সব ধরনের “স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ” জব্দ করা হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়,

“চীনের ভেতরে তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এবং অন্যান্য সব ধরনের সম্পদ জব্দ করা হবে; চীনের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন, সহযোগিতা বা কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারবে না; পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের চীনে প্রবেশ বা ভিসা প্রদান নিষিদ্ধ করা হবে।”