ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অন্তত ৪০টি নৌযান আটক করা হয়েছে। যাত্রীদের সবাইকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং একে একে তারা আশদোদ বন্দরে পৌঁছাবে। সেখান থেকে তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ফ্লোটিলার কোনো নৌযানই 'সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করা বা আইনত বৈধ নৌ-অবরোধ ভাঙার চেষ্টা' সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'সব যাত্রী নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। তাদেরকে নিরাপদে ইসরায়েলেনিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেখান থেকেই তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে।'
তবে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনো একটি নৌযান যাত্রাপথে আছে। সেটি যদি যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে অগ্রসর হয়ে অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করে, তবে সেটিকেও আটকানো হবে।
ফ্লোটিলা ট্র্যাকারের তথ্যমতে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় মোট ৪৪টি নৌযান ছিল।
এদিকে ইউরোপীয় গ্রীন পার্টি ফ্লোটিলা আটকের ঘটনাকে 'আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এক বিবৃতিতে দলের সহসভাপতি ভুলা তসেতসি বলেন, 'মানবিক সহায়তা আটকে দেওয়া এবং স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের কণ্ঠরোধ করা অগ্রহণযোগ্য।'
তিনি আরও বলেন, 'এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠান ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন অবিলম্বে উদ্যোগ নিয়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করে।'
এর আগে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি নৌযান গাজার জলসীমায় প্রবেশ করে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, মিকেনো নামের নৌযানটি বর্তমানে গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় অবস্থান করছে। তবে ইসরায়েলি বাহিনী সেটি আটক করেছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
এর আগে জানানো হয়েছিল, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর বাধার পরও অন্তত ২৬টি নৌযান গাজার উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি কমান্ডোরা অব্যাহতভাবে নৌযানগুলো আটকের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে, গাজার উদ্দেশ্যে মানবিক সহায়তা বহনকারী বেশ কয়েকটি নৌযান এবং তাতে থাকা অধিকার কর্মীদের আটক করে ইসরায়েলের নৌবাহিনী। আটক দুই শতাধিক অধিকারকর্মীর মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার (জিএসএফ) মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী সমুদ্রে তাদের ১৩টি নৌকাযান আটক করেছে।আবুকেশেক জানান, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে ৩৭টি দেশের ২০১ জনেরও বেশি মানুষ ছিলেন। এর মধ্যে ৩০ জন স্পেনের, ২২ জন ইতালির, ২১ জন তুরস্কের এবং ১২ জন মালয়েশিয়ার নাগরিক।
তিনি জানান, কর্মী ও নৌযান আটকের পরও তাদের 'মিশন চলছে' এবং বহরের বাকি নৌযানগুলো 'ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গাজার অবরোধ ভাঙার' চেষ্টা করছে।
এদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (জিএসএফ)–এর কয়েকটি নৌযান 'নিরাপদভাবে থামানো' হয়েছে এবং এতে থাকা যাত্রীদের ইসরায়েলের একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বাধার দেওয়ার কারণ হিসেবে তারা জানায়, নৌযানগুলোকে দিক পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছিল নৌবাহিনী, কারণ এগুলো 'সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল'।