নেপালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ রক্তক্ষয়ী রূপ নেয়ার পর পদত্যাগ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করা এবং দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে বহু প্রাণহানির দায় স্বীকার করে সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বাসভবন বালুওয়াতারে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে পদত্যাগপত্র জমা দেন লেখক। এতে তিনি লিখেছেন, ‘আজকের বিক্ষোভে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানি ঘটেছে। এর নৈতিক দায় আমার, তাই আমি পদে থাকতে চাই না।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫০ জন, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় মন্ত্রীর ওপর চাপ বাড়তে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে পদ ছাড়তে হয়।
অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো বলছে, শুধু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ যথেষ্ট নয়। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলিকেও দায়িত্ব নিতে হবে এবং অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
নেপালের মানবাধিকার কমিশন অভিযোগ করেছে, বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলেন, কিন্তু পুলিশ অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তারা এ ঘটনায় তদন্ত ও জবাবদিহি দাবি করেছে।
প্রসঙ্গত, ফেসবুক, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার পর থেকেই নেপালে বিক্ষোভ শুরু হয়। সোমবার সকালে শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও পরে হাজারো মানুষ পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি ও বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।