আন্তর্জাতিক

ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রের যোদ্ধা: নোবেলজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক রূপান্তরের জন্য তার দীর্ঘ সংগ্রামকে স্বীকৃতি দিয়েছে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।

৫৮ বছর বয়সী মারিয়া কোরিনা মাচাদোর জন্ম ১৯৬৭ সালের ৭ অক্টোবর, ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে। পেশায় তিনি একজন শিল্প প্রকৌশলী। তার বাবা দেশটির ইস্পাত শিল্পের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ছিলেন। এই উচ্চবিত্ত পটভূমির কারণেই তাকে প্রায়ই ভেনেজুয়েলার শাসক সমাজতান্ত্রিক দল সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু করেছে।

২০২৩ সালের বিরোধী জোটের প্রাথমিক নির্বাচনে মাচাদো বিপুল ভোটে জয়ী হন এবং তার জনসভাগুলোতে লাখো মানুষ সমবেত হয়। তবে সরকারের নিষেধাজ্ঞায় তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি এবং পরে আত্মগোপন করেন।

ভেনেজুয়েলার নির্বাচন কমিশন ও সুপ্রিম কোর্ট দাবি করে, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন—যদিও তারা কখনো বিস্তারিত ভোটের ফল প্রকাশ করেনি। মাচাদো পরে জানুয়ারিতে মাদুরোর শপথগ্রহণের আগে এক বিক্ষোভে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য উপস্থিত হন, পরবর্তীতে তাকে গ্রেপ্তার করে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়।

মাচাদো দেশের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারিকরণের পক্ষে। একইসঙ্গে তিনি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তায় সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচি চালুর আহ্বান জানান।

রাজনৈতিক কার্যক্রমের কারণে মাচাদো এখন প্রায় একাকী সংগ্রাম চালাচ্ছেন। তার অধিকাংশ উপদেষ্টা গ্রেপ্তার বা নির্বাসিত। তিনি মাদুরোর সরকারকে বারবার বলেছেন, এটি একটি ‘অপরাধী চক্র’ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।

নিজেকে প্রচারে রাখার চেয়ে মাচাদো জনগণের ঐক্য ও আশা জাগানোর দিকেই মনোযোগ দেন। সমালোচকরা যদিও তাকে কখনো কখনো আত্মকেন্দ্রিক বলেন—তবু তিনি নিজেকে নয়, বরং পুরো জাতির ‘মুক্তির সংগ্রামের প্রতীক’ হিসেবে উপস্থাপন করেন।

নোবেল কমিটির মতে, মাচাদোর এই দৃঢ়তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম ভেনেজুয়েলাবাসীর জন্য আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সূত্র:রয়টার্স