আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষতি করছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী: জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী পাকিস্তান সরকার। কিন্তু দেশটির সেনাবাহিনী তাতে বাধা সৃষ্টি করছে। পাকিস্তানভিত্তিক খাইবার টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের মুখপাত্র এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী জবিহুল্লাহ মুজাহিদ।

আজ শনিবার (১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ। প্রতিবেদন মতে, সাক্ষাৎকারে মুজাহিদ বলেছেন, ‘পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যকার কিছু গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ দূত সাদিক খান কাবুলে আফগান কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা করেছেন। কিন্তু একই সময়ে পাকিস্তান আফগান ভূখণ্ডে হামলা চালায়। এ থেকে স্পষ্ট যে, বেসামরিক সরকার সম্পর্ক গড়তে চায়, কিন্তু সামরিক বাহিনী সেই প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

ডুরান্ড লাইনের ক্রসিং বন্ধ করে দেয়ার ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের বিষয়গুলো রাজনীতি থেকে আলাদা রাখা উচিত।’

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সময় দুই দেশের সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ইমরানের আমলে সম্পর্ক ভালো ছিল- বিশেষ করে বাণিজ্য, টিটিপি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সবকিছু সুষ্ঠুভাবে চলছিল।’

সন্ত্রাস দমন ইস্যুতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনে বলেন, তারা যেন আফগান মাটিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাদের কাছে থাকা যেকোনো তথ্য আফগানিস্তানের সাথে ভাগাভাগি করে যাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া যায়।

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান চায়, আমরা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঘটতে থাকা (সন্ত্রাসী) ঘটনাগুলো রোধ করি, কিন্তু এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ইসলামিক আমিরাত পাকিস্তানে নিরাপত্তাহীনতা চায় না এবং আফগান ভূখণ্ড থেকে যাতে কোনো হুমকি না আসে তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

মুজাহিদ আশা প্রকাশ করেন যে, কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে পরবর্তী দফা আলোচনায় (যা আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা) উভয় পক্ষ আন্তরিক ও বাস্তবসম্মত আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজে বের করবে।

এদিকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে ১১ অক্টোবর থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকা তোরখম সীমান্ত ২১ দিন পর আংশিকভাবে খুলে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের খাইবার জেলার ডেপুটি কমিশনার বিলাল শাহিদ। শনিবার এ খবর জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।