আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনে পশ্চিমা বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাবে পুতিনের হুঁশিয়ারি

Reporter

ইউক্রেনে পশ্চিমারা সেনা মোতায়েন করলে তাদের ওপর হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, বিদেশি সেনারা হবে তাদের বৈধ লক্ষ্য। এর আগে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, যুদ্ধ শেষে কিয়েভের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২৬ দেশ সেনা পাঠাতে রাজি হয়েছে। তার দাবি- দীর্ঘমেয়াদে দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নেয়া হবে এই পদক্ষেপ।

চলতি সপ্তাহে ফ্রান্সের নেতৃত্বে প্যারিসের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে বৈঠকে বসে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা। যাতে অংশ নেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কিও। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরণের দাবি, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুদ্ধবিরতির পর সেখানে সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২৬টি দেশ। কিয়েভকে সহায়তা লক্ষ্যে গঠিত কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’র বাকি সদস্যরাও শীগগিরই এই ইস্যুতে তাদের অবস্থান জানানোর আশ্বাস দিয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরন বলেন, ২৬টি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আরও কয়েকটি দেশ তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবে বলে জানিয়েছে। এই ২৬ দেশ স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথের নিরাপত্তায় তারা ইউক্রেনে সামরিক বাহিনী পাঠাতে রাজি। যুদ্ধবিরতি বা শান্তি প্রতিষ্ঠার পরদিন থেকেই ইউক্রেনের ভূখণ্ডে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো আমরা।

যুক্তরাষ্ট্র এতে কতটা সম্পৃক্ত হবে তা স্পষ্ট করেনি। ম্যাকরন জানিয়েছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত আকাশপথে সহায়তা দিতে পারে। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের আকাশসীমায় সর্বোচ্চ সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

পশ্চিমাদের এমন অবস্থান ভালোভাবে নেয়নি রাশিয়া। ইউক্রেনে অন্য কোনো দেশ সেনা পাঠালে তাদের ওপর হামলার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে সম্ভাব্য বিদেশি সামরিক উপস্থিতি আসলে দেশটিকে ন্যাটোর কক্ষপথে টেনে নেওয়ার অন্যতম মূল কারণ। তাই সেখানে যদি কোনো সেনা মোতায়েন হয়, বিশেষ করে যুদ্ধের এই সময়ে, তাহলে আমরা ধরে নেব, তারা বৈধ লক্ষ্য এবং ধ্বংসের জন্য উপযুক্ত।

পুতিন আরও জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানে ইউক্রেনকে বাধা দেবে না মস্কো। তবে, জেলেনস্কির ন্যাটোতে যোগ দেয়ার স্বপ্ন পুরণ হতে দেবেন না বলেও সাফ জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, সাড়ে তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন ফ্রন্টলাইনে। একইসাথে বৈরিতা বন্ধে কূটনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত। শান্তি চুক্তির জোরালো সম্ভাবনা দেখা না গেলেও যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে ছঁক কষছে পশ্চিমারা— এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।