ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা অভিমুখী জাহাজ কনশেনস ও ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের অন্যসব জাহাজে থাকা সব ব্যক্তির নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান।
বুধবার (৮ অক্টোবর) জাতিসংঘের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ এ র্যাপোর্টিয়ার বলেন, সমুদ্রে নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষদের ওপর ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে আরও একটি লঙ্ঘন।
জাতিসংঘের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল ভোরে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে এসব জাহাজ ইসরায়েলি সামরিক হেলিকপ্টার আটক করেছে বলে জানা গেছে। একই সময় সেসব জাহাজে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর সদস্যরা উঠেন। ধারণা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে আটকের এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ফ্লোটিলা সদস্যদের আটক করা হয়েছে এবং আটককৃতদের ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরের দিকে নেয়া হচ্ছে।
ফ্লোটিলার প্রধান জাহাজ কনশেনসে যাত্রী ছিল ৯২ জন। এদের মধ্যে সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীরা ছিলেন। তারা গাজায় হওয়া ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙার জন্য যাত্রা করেছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৬ জন আন্তর্জাতিক সাংবাদিক। তারা ১০টি দেশের ও ১২টির মতো সংবাদমাধ্যমে কাজ করছিলেন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে আরও জানা যায়, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ আইরিন খান ফ্লোটিলার ক্রু ও সদস্যদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ভীষণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার কর্মীরা ইসরায়েলি হেফাজতে থাকার সময় অসদাচরণের শিকার হওয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ইসায়েলের দায়িত্ব হচ্ছে অন্যায়ভাবে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের সব অধিকার নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যসেবা দেয়া ও নির্যাতনের শিকার হওয়া বা দুর্ব্যবহার থেকে রক্ষা করা। ইসরায়েলকে আমরা আহ্বান জানাই, তারা যেন অবিলম্বে তাদের আইনজীবী ও কনস্যুলার সেবার বিষয় নিশ্চিত করে।
আইরিন খান বলেন, এই সাহসী সাংবাদিকরা স্থানীয় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার জন্য সমুদ্রপথে যাত্রা করেছিলেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা বিপদের মধ্যে থাকার পরও সংবাদ পরিবেশন করেছেন। এ পর্যন্ত ৫২ জনের বেশি ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে এবং যুদ্ধপরাধসংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি বন্ধ করার জন্য তাদের অনেককে উদ্দেশ্যমূলকভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
এছাড়াও জাতিসংঘের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, আটককৃতরা মতপ্রকাশের অধিকার এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি দেখানো ও সাহায্য করার স্বাধীনতা রাখেন। আর ইসরায়েলের দায়িত্ব হচ্ছে এসব অধিকারগুলোর প্রতি সম্মান জানানো।