ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় খাদ্য ও ত্রাণের প্রবেশ সীমিত করে দেওয়ার পর থেকে যে মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সেখানে, তা এখনই শেষ হওয়া উচিত বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার।
শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে দেওয়া ভাষণে এ ইস্যুতে নিজের এবং নিজের নেতৃত্বাধীন সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন স্টারমার। ভাষণে তিনি বলেন, “আমি জানি, গাজায় মানবসৃষ্ট খাদ্যসংকট এব তার জেরে সেখানাকার বাসিন্দাদের তীব্র ক্ষুধার যেসব চিত্র প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে ব্রিটেনের জনগণ মানসিকভাবে রীতিমতো অসুস্থ বোধ করছে।”
“গাজার শিশুদেরকে, বেসামরিক জনগণকে দিনের পর দিন ধরে মানবিক সহায়তা প্রদান না করার ব্যাপারটি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। একই সঙ্গে মাসের পর মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের বন্দি থাকা এবং সেখানে ইসরায়েলের সামঞ্জস্যহীন সামরিক অভিযানও কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।”
“গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে শত শত বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, শিশুরা পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে খুন হচ্ছে…এটি একটা মানবিক বিপর্যয় এবং এখনই এটা শেষ হওয়া উচিত।”
গাজা উপত্যকার সীমান্তে ত্রাণের পাহাড় জমে উঠলেও সাধারণ ফিলিস্তিনিরা না খেয়ে থাকায় হতাশা প্রকাশ করে স্টারমার বলেন, “গাজার বাসিন্দাদের জন্য টনের পর টন ত্রাণ জমা পড়েছে। আমরা নিজেরাই লাখ লাখ পাউন্ড খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছি। চলতি বছর গাজার বাসিন্দাদের জন্য অতিরিক্ত ৪ কোটি পাউন্ড বরাদ্দেরও ঘোষণা দিয়েছি। কিন্তু সেসব গাজার বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।”
“তাই আমরা এখন অন্যভাবে এগোনোর চেষ্টা করছি। গাজার যেসব শিশু নিবিড় চিকিৎসা সহায়তা প্রয়োজন, তাদেরকে গাজা থেকে যুক্তরাজ্যে এনে চিকিৎসা সেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনেক দেরিতে হলেও সম্প্রতি ইসরায়েল বিমান থেকে গাজায় ত্রাণ ফেলার অনুমতি দিয়েছে। আমরা এই সুযোগটির সদ্ব্যবহার করতে চাই। ইতেমধ্যে জর্ডানের সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে এবং তারা জানিয়েছে যে গাজায় বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার ক্ষেত্রে ব্রিটেনকে সহযোগিতা করবে জর্ডান।”
“সর্বোপরি আমি বলতে চাই, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তিস্থাপনে যুক্তরাজ্যের বর্তমান সরকারের অবস্থান খুবই দৃঢ় এবং বর্তমানে গাজায় যে যুদ্ধ চলছে, তা থামাতে সরকার তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”