যুক্তরাজ্যে ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ থেকে ৪২৫ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে হাজারো মানুষ এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ডে লিখে আনেন— ‘আমি গণহত্যার বিরোধী, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের পক্ষে।’
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, অধিকাংশ গ্রেপ্তার হয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থনের অভিযোগে। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা ও জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আরও অন্তত ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকার গত জুলাই মাসে টেরোরিজম অ্যাক্টের আওতায় প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে নিষিদ্ধ করে। এর ফলে এ সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ বা প্রকাশ্যে সমর্থন করা এখন অপরাধ। এর সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড।
পুলিশ জানায়, সমাবেশে কর্মকর্তারা ঘুষি, লাথি ও বিভিন্ন জিনিস নিক্ষেপসহ অস্বাভাবিক মাত্রার হামলার শিকার হয়েছেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তারা সতর্ক করেছে।
অন্যদিকে আয়োজক সংগঠন ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস অভিযোগ করেছে, পুলিশ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে, এমনকি বয়স্কদেরও আঘাত করেছে। তারা এক ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যায়, এক প্রবীণকে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে শরীর ঢিলে করে দেন যাতে তাদের বহন করা কঠিন হয়।
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনের ক্যাম্পেইনস ডিরেক্টর কেরি মস্কোজিউরি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে সাইন ধরে রাখার জন্য মানুষকে গ্রেপ্তার করা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যখন সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের আটক করে, তখন বোঝা যায় কিছু ভয়াবহভাবে ভুল হচ্ছে।’
শুধু লন্ডন নয়, এদিন স্কটল্যান্ডের এডিনবরায়ও একই ধরনের বিক্ষোভ হয়, যেখানে আরও দু’জনকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ।
এর আগে গত আগস্টে লন্ডনের অনুরূপ এক কর্মসূচি থেকে ৫০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যাদের গড় বয়স ছিল ৫৪ বছর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গ্রেপ্তার অভিযান যুক্তরাজ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক প্রতিবাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।