চ্যানেল 24, channel 24
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে ৫ কোটি ৫০ লাখ ভিসাধারীর রেকর্ড যাচাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ ভিসাধারী প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ বিদেশির রেকর্ড পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ভিসা সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন বা বহিষ্কারের মতো অপরাধের প্রমাণ মিললে তাদের ভিসা বাতিল কিংবা বহিষ্কারের মুখে পড়তে হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।

বৃহস্পতিবার এক ঘোষণায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, বাণিজ্যিক ট্রাক চালকদের জন্য নতুন কর্মভিসা ইস্যু আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। এক্স-এ দেয়া বার্তায় তিনি দাবি করেন, বিদেশি ট্রাক চালকরা “আমেরিকানদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে এবং স্থানীয় ট্রাক চালকদের জীবিকা ধ্বংস করছে।

পররাষ্ট্র দপ্তর এক লিখিত বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সব ভিসাধারী ‘নিরবচ্ছিন্ন যাচাইয়ের’ আওতায় আছেন। ভিসা ইস্যুর পর কোনো তথ্য সামনে এলে যা অযোগ্যতার ইঙ্গিত দেয়, তবে সেই ভিসা বাতিল হবে। আর ওই ব্যক্তি যদি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, তবে তাকে দেশ ছাড়তে হবে।

দপ্তরের ভাষ্যমতে, অযোগ্যতার ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হবে ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে অবস্থান, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি, কোনো ধরনের “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে” জড়িত থাকা বা “সন্ত্রাসী সংগঠনকে” সহায়তা করা।

২০২৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। শুধু অবৈধ অভিবাসী নয়, বৈধ কাগজপত্রধারীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। যদিও শুরুতে সরকার বলেছিল, কেবলমাত্র বিপজ্জনক অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, কিন্তু এখন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমসের হিসাবে চলতি বছর প্রায় ৪ লাখ মানুষকে বহিষ্কার করার পথে রয়েছে প্রশাসন।

রেস্তোরাঁ, নির্মাণকাজের স্থান, কৃষিখামার এমনকি আদালতেও অভিযান চালিয়ে বৈধ কাগজপত্রধারী কর্মীদের আটক করছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে মানবিক কারণে দেয়া অস্থায়ী সুরক্ষা এবং হিউম্যানিটারিয়ান প্যারোলও সীমিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যা বহু বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও কাজের সুযোগ দিয়েছিল।

শিক্ষার্থী ভিসাধারীরাও নজরদারির আওতায় আছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৬ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। তাদের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গ বা “সন্ত্রাসবাদে সমর্থন” দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে কেবল ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ বা মতামতমূলক লেখা প্রকাশের মতো কার্যক্রমকেও কারণ দেখানো হয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানেই সুরক্ষিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে। এমনকি অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ না নিয়েই।

তথ্য: আল জাজিরা