অপরাধ

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে বিচারকার্য শুরু করার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অনুপস্থিতিতেই বিচারকার্য শুরুর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং–১৮ এ আদেশ দেন।

সিআইডি জানায়, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনটি মূল এজেন্ডা ছিল—সংস্কার, নির্বাচন ও বিচার। সেই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত দায়িত্ব পেয়ে সংস্থাটি মাত্র পাঁচ মাসেরও কম সময়ে তদন্ত সম্পন্ন করে গত ১৪ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২১, ১২১(ক) ও ১২৪(ক) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০২৫ সালের ২৭ মার্চ রাজধানীর রমনা থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলা করে সিআইডি। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে কয়েকজন অংশগ্রহণকারী বর্তমান সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা, গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির আহ্বান এবং শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেন।

সিআইডি প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য, ডিজিটাল উপাত্ত ও ভয়েস রেকর্ড বিশ্লেষণ করে এসব তথ্যের সত্যতা পায়। পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে তদন্তে নামে সংস্থাটি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পলাতক শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলমসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে সিআইডি।

এই মামলায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলখানায় আটক ৯১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি ১৯৫ জন আসামি পলাতক বলে জানিয়েছে সিআইডি। শুনানিতে প্রধান আসামিসহ অধিকাংশ অনুপস্থিত থাকায় আদালত জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরু করার নির্দেশ দেন।

সিআইডি জানিয়েছে, দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে সংস্থাটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য ‘বিচার’ কার্যকর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।