আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির মূলহোতা হিসেবে পরিচিত মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, বিশেষ অভিযানে তাকে গুলশানের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে—স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, টেন্ডার জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন। সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন।
ডিবি জানায়, মিঠু দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির অন্যতম মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত।
স্বাস্থ্য খাতে ‘সিন্ডিকেট করে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারে’ জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে বুধবার মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তার বিরুদ্ধে ৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইস ও টেকনোক্রেট নামের কোম্পানির মালিক মো. মোতাজ্জেরুল ইসলাম (মিঠু) কৃষি জমি ক্রয়, জমি লিজ, প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি নির্মাণে মোট ১৮ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেন।
এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার ও বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী মিলিয়ে তার আরও ৫৭ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ২৩৮ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
সব মিলিয়ে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৮ টাকা।
এছাড়া মিঠুর নামে পারিবারিক ব্যয়ের পরিমাণ পাওয়া গেছে ৭১ কোটি ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৪ টাকা। অর্থাৎ পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদ ও ব্যয়ের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ ৪৬ হাজার ১৭২ টাকা।
দুদক বলছে, ব্যবসা, বাড়িভাড়া, কৃষি আয়, বেতন-ভাতা, ফার্মের অংশ, ব্যাংক সুদ, নিরাপত্তা জামানতের সুদ এবং বৈদেশিক রেমিট্যান্স থেকে মোতাজ্জেরুল ইসলামের বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে ৭১ কোটি ৪৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩৫ টাকা।