অপরাধ

ফেসবুক ইনবক্সে নতুন সাইবার ফাঁদ: তরুণদের ভয়, প্রতারকদের উপার্জন

তরুণরা এখন অনলাইন ভয়-ভীতি ও অর্থালাপের ফাঁদে পড়ছে, আর প্রতারকরা আয়ের নতুন উপায় খুঁজে পাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা ও বড় শহরগুলোর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এখন আর নিরাপদ নন। গত কয়েক মাসে ব্যাপকভাবে বেড়েছে এই প্রতারণা ।

কী হচ্ছে?

  • ভিকটিমদের ফেসবুক ইনবক্সে হঠাৎ একটি বার্তা আসে, যেমন:

“আপনার কিছু ছবি আমাদের কাছে আছে, লিক হবে যদি না টাকা পাঠান।”

“আপনার আইডি হ্যাক করা হয়েছে, এই মুহূর্তে প্রতিরোধ করতে চাইলে টাকা পাঠান।

বার্তা পাঠানোর আগে প্রতারকরা সাধারণত ভিকটিমের প্রোফাইল ঘেঁটে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি এবং বন্ধুবান্ধবের তালিকা পরীক্ষা করে। তারপর মনগড়া প্রমাণের সঙ্গে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে।


*ঢাকার একটি কলেজছাত্রী শেয়ার করেছেন, “রাত ১টার সময় ইনবক্সে বার্তা এলো। বলা হলো, ‘আপনার কিছু ছবি আমাদের কাছে আছে’। আমি ভয়ে আৎকে উঠেছিলাম। তারপর পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সাইবার সেলে অভিযোগ করলাম।”

পরিসংখ্যান ও তদন্ত-

সাইবার ইউনিট জানাচ্ছে, ৯০% ক্ষেত্রেই এসব ছবি বা চ্যাট সম্পূর্ণ ভুয়া। অনেকে ভয়ে টাকা পাঠায়, কেউ চুপচাপ ব্লক করে রাখে।


এই চক্র মূলত:

  • স্কুল–কলেজপড়ুয়া তরুণ

  • নতুন চাকরিজীবী

  • কম সামাজিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে

প্রতারণার এই ধরনের ঘটনা রাজধানী ও উপশহরে বেশি দেখা যাচ্ছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বাধিক সক্রিয়।

পুলিশি পদক্ষেপ-

সাইবার ইউনিট ইতোমধ্যে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার কয়েকটি চক্র শনাক্ত করেছে। অভিযানে জানা গেছে, প্রতারকরা ভুয়া প্রোফাইল ব্যবহার করে, একাধিক নাম ও ছবি দিয়ে সহজে ট্র্যাক এড়াচ্ছে। পুলিশ বলছে, “ভিকটিমের সচেতনতা এবং দ্রুত রিপোর্টই প্রতারণা ঠেকাতে সবচেয়ে কার্যকর।”

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ-

  • অনিচ্ছাকৃত লিংকে ক্লিক করবেন না

  • অপরিচিত ব্যক্তির ইনবক্স বার্তা উপেক্ষা করুন

  • ভয় দেখানো হলে ঘাবড়ে যাবেন না, ব্লক করে রিপোর্ট করুন

  • ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি বা ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত তথ্য কোনো অবস্থাতেই শেয়ার করবেন না


সাইবার বিশেষজ্ঞরা মনে করান, এটি শুধু সাধারণ প্রতারণা নয়।

এখন এটি অনলাইন ব্ল্যাকমেইলিং-এর একটি নতুন তরঙ্গ, যা সচেতন না হলে আরও বড় ক্ষতি করতে পারে।