অপরাধ

কিশোরকে গলা কেটে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই: ছিনতাইকৃত অটোরিকশা ও হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিসহ গ্রেফতার ০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘটনার ত্রিশ ঘণ্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্দ্বাটন এবং জড়িতদের গ্রেফতার করেছে তুরাগ থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মোঃ সামিদুল হক মনা (৪২) ২। মোঃ রবিউল ইসলাম রানা (২০) ৩। হজরত আলি (৪৫) ও ৪। মোঃ নয়ন মিয়া (৩০)। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি, বিশেষ কায়দায় তৈরীকৃত নাইলনের রশি ও ভিকটিমের চালিত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।

তুরাগ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) বিকাল আনুমানিক ০৪.০০ ঘটিকার সময় তুরাগ থানাধীন ১৭নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর ব্রিজের পূর্ব পাশে এইচ ব্লক রোড নং-৩/এ-এর একটি ফাঁকা জমির ছনের ভেতর গলাকাটা অবস্থায় অজ্ঞাত এক কিশোরের (বয়স আনুমানিক ১৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ৯৯৯-এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে তুরাগ থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

পরবর্তীতে নিখোঁজ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করে জানা যায়, নিহত কিশোরের নাম মোঃ শান্ত (১৬)। তিনি গত (১৬ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রিকশা চালাতে বের হয়ে আর বাসায় ফিরে আসেনি। এ সংক্রান্তে ভিকটিমের মা বাদি হয়ে কাফরুল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রী করেছিলেন। পরে নিহতের মামা মোঃ শহিদুল ইসলাম মরদেহটি তার ভাগ্নে মোঃ শান্ত বলে শনাক্ত করেন।

তুরাগ থানা পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ থানা পুলিশ অত্যন্ত দ্রুততার সাথে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করে। প্রথমে কাফরুল এলাকা থেকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ সামিদুল হক মনাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোঃ রবিউল ইসলাম রানা, হজরত আলি ও মোঃ নয়ন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যে ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করার উদ্দেশ্য তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে শান্তকে ৭ নম্বর ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কৌশলে ফাঁকা জমিতে নিয়ে গিয়ে রবিউল ইসলাম রানা নাইলনের রশি দিয়ে গলা চেপে ধরে এবং সামিদুল হক মনা ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে ভিকটিম শান্তকে হত্যা করে। পরে তারা অটোরিকশাটি নিয়ে ভাষানটেকের দিকে চলে যায় এবং হজরত আলি ও নয়ন মিয়ার সহায়তায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নয়ন মিয়ার নিকট ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে আজ (১৯ নভেম্বর) নেত্রকোনার দুর্গাপুর থেকে ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয় এবং ক্রেতা মোঃ নয়ন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। একই সাথে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও বিশেষ কায়দায় তৈরি নাইলনের রশি উদ্ধার করা হয়।

ঘটনায় তুরাগ থানায় নিয়মিত হত্যা মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।