লাইফস্টাইল

৬১ বছর বয়সে মেয়ের পুত্রের জন্ম দেন ক্রিস্টিনা কেসি, হতবাক বিশ্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনেকটা সিনেমার গল্পের মতো শোনাতে পারে ঘটনাটি। মেয়ের পুত্র অর্থাৎ নাতিকে গর্ভে ধারণ করে এবং জন্ম দিয়ে বিরল ঘটনার জন্ম দিয়েছেন ক্রিস্টিনা কেসি। আর সেই গল্প শুনিয়ে বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছেন তিনি। পচাত্তর বছর বয়সী ক্রিস্টিনা কেসি ও তাঁর কন্যা সারা সম্প্রতি জনপ্রিয় মার্কিন টেলিভিশন টক শো ‘গুড মর্নিং আমেরিকা’র অতিথি হয়ে তাঁদের জীবনের এমন এক সত্য ঘটনা প্রকাশ করেছেন। যা বিশ্বে রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। ২০১১ সালে ৬১ বছর বয়সে তিনি তাঁর ‘নাতি-পুত্র’ ফিনেন লিকে (ডাকনাম ফিন) জন্ম দেন। ফিনের মা সারা কনেল ক্রিস্টিনা কেসির কন্যা। আর ফিনের বাবা বিল কনেল ক্রিস্টিনার জামাতা।

মা-মেয়ের এই গল্প থেকে জানা গেছে, ক্রিস্টিনা কেসির শারীরিক ঋতুৃ প্রক্রিয়া বন্ধ হয় বা মেনোপজ শুরু হয় ৫১ বছর বয়সে। আর তিনি মা হল এরও ৩০ বছর আগে। তাঁর একমাত্র কন্যা সারা কনেল সন্তান গর্ভধারণে শারীরিকভাবে অক্ষম ছিলেন। মেয়ের মা না হতে পারা কষ্ট তিনি সব সময় অনুভব করেন এবং তাকে সহায়তার আপ্রাণ চেষ্টা করেন।

ক্রিস্টিনা ‘গুড মর্নিং আমেরিকা’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, মেয়ের সন্তান না হওয়ার কষ্ট তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন। এ কারণে তাঁর মনটাও খুব পুড়ছিল। একের পর এক মিসক্যারেজের ফলে কন্যা সারা শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ক্রিস্টিনা তাঁর কন্যাকে যেকোনো মূল্যে সাহায্য করতে চাইছিলেন। আর এই ভাবনা থেকেই ক্রিস্টিনা ‘সারোগেট মাদার’ হিসেবে মেয়ের সন্তানকে জন্ম দেন ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের (আইভিএফ) মাধ্যমে।

এ ক্ষেত্রে কন্যা সারা কনেলের ডিম্বাণু ও বিল কনেলের শুক্রাণু নিষিক্ত করে ভ্রূণ স্থাপন করা হয়েছিল ক্রিস্টিনা কেসির জরায়ুতে। ক্রিস্টিনা মূলত ‘গর্ভ ভাড়া’ দিয়েছেন। এ জন্য তাঁকে হরমোন সাপ্লিমেন্টেশনের সহায়তা নিতে হয়েছে। পূর্ণ মেয়াদে অর্থাৎ প্রায় ১০ মাস তিনি তাঁর নাতি-পুত্রকে গর্ভে ধারণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর প্রেন্টিস উইমেনস হসপিটালে সি সেকশনের মাধ্যমে কন্যার পুত্রসন্তানের জন্ম দেন নানি ক্রিস্টিনা।

ক্রিস্টিনা জানান, নিজের সবচেয়ে আপনজন বা ভালোবাসার মানুষকে সাহায্য করতে পারার অনুভূতির সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না। অন্যদিকে সারা বলেন, ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে দুর্দান্ত ঘটনা। আমার কৃতজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

ক্রিস্টিনা বলেন, ‘আমি এখনো আমার শরীরে ওর (ফিনের) হৃৎস্পন্দন অনুভব করতে পারি। ওকে জন্ম দেওয়ার পর নিজেকে নিয়ে খুব আত্মবিশ্বাসী অনুভব করেছি।’

ফিনের জন্মের পর নানি ক্রিস্টিনা বেবিসিটার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। আর সেটি ছিল ক্রিস্টিনার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় সময়।