জাতীয়

প্রশাসনে অস্থিরতা ও মবভীতি: সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ

Reporter

আওয়ামী লীগ আমলে তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার। ক্ষমতাসীন দলের আজ্ঞাবহ হয়ে বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছিলেন ডিসি-এসপি-ইউএনও-ওসিরা। আর এখন মব ভীতি ও অস্থিরতা কাজ করছে প্রশাসন ও পুলিশে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে ডিসি ও ইউএনওদের নিয়োগের জন্য বিবেচনা করছে যোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা। নির্বাচন সামনে রেখে শুরু হয়েছে নতুন ডিসি নিয়োগ ও রদবদল প্রক্রিয়া।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, অনেকে পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হয়ে গেছে। ধাপে ধাপে তারা ওঠে আসবে, এখন অনেক জায়গায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরও কয়েকজন ডিসিকে সরানো হবে, নতুন দেয়া হবে। নির্বাচনের আগে মোটামুটি একটা পর্যায়ে যেখানে যেখানে দরকার সেখানে ডিসি নিয়োগ দেয়া হবে নতুন করে।

নির্বাচনকালীন এসপি-ওসি পদায়নে লটারির ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ডিসি-ইউএনওদের ক্ষেত্রে এ পথে হাঁটছে না জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। লটারিতে বড় ধরনের সংকট দেখছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া।

তিনি বললেন, লটারির মাধ্যমে করার মানে কী? এতে সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। কারণ, সরকার যদি উপযুক্ত লোক বাছাই করতে না পারে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের চাপ সামলাইতে না পারে; এটা তো তাদের সামলানোর কথা। এখানে লটারির প্রশ্ন আসবে কেন? লোকজন তো চাইবে, পলিটিক্যাল পার্টি চাইবে আমাকে দাও, সেটা সরকার শুনবে কেন?

মো. মোখলেস উর রহমান বলেছেন, আমাদের নিয়োগবিধি আছে, বদলি-পদায়নের বিষয়গুলো সব সেট করা। এগুলো নিয়ম মতো হবে। এখানে কোনও সমস্যা নেই এবং এবার আমাদের অনেক আবেগ, সময় দিচ্ছি।

জাতীয়সহ বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্বপালন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া। বলছেন, নির্বাচনে সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ আইনশৃঙ্খলা।

মো. ফিরোজ মিয়া বলেন, বর্তমানে পুরো জনপ্রশাসনটাই কিন্তু অস্থির ও দুর্বল এবং তাদের মধ্যে মারাত্মক একটা ভীতি কাজ করছে। সরকারের উচিত তাদেরকে এমন নিশ্চয়তা দেয়া, যেকোনও মব সৃষ্টি হলে সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সেনাবাহিনী প্রতিহত করবে।

মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, প্রশাসনিক যে প্রস্তুতি সেটা আপডেটেড, কোনও সমস্যা নেই। নির্বাচন তফসিল যেদিন ঘোষণা হবে সেটা হলো শিডিউল। এর আগে থেকে আমাদের যা যা প্রস্তুতি নেয়া নেয়া, প্রশাসন প্রস্তুত।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ডিসি-এসপি না, ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে সাহসী ও নিরপেক্ষ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ নিয়েও পরিকল্পনা থাকতে হবে সরকারের।