জাতীয়

১/১১-এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে: মাহফুজ আলম

Reporter

আবারও এক-এগারোর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

সোমবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।

তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই লেখেননি উপদেষ্টা।

তার পোস্টে তায়েফুর রহমান নামের একজন কমেন্ট করেছেন, ‘১/১১-এর আগে রাস্তা এবং রাজনীতির যে প্রেক্ষাপট ছিল, আজ তা অনুপস্থিত অথবা আমাদের কাছে দৃশ্যমান নয়। আপনি একবাক্যে যদি এ রকম কথা বলেন তাহলে কিভাবে হবে, বলুন?’

তার এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মাহফুজ আলম। উত্তরে সংক্ষেপে তিনি লিখেছেন, দৃশ্যমান হচ্ছে, হবে।

মাহবুব হাবিব নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ১/১১ এখন আর শুধুমাত্র একদিনের ঘটনা নয়, এটা একটা রাজনৈতিক মডেল। রূপ বদলেছে, কৌশল বদলেছে, কিন্তু রেশনাল সেই একই: গণতন্ত্রহীনতা, সিভিল প্রশাসনের সামরিকীকরণ, এবং আইনশৃঙ্খলার নামে শাসনযন্ত্রের নিপীড়ন। আজকের রাষ্ট্র কাঠামো দিনকে দিন সেই মডেলেরই দীর্ঘায়িত সংস্করণ হয়ে উঠছে বিনা পোশাকে, কিন্তু একই হিংস্রতা ও কর্তৃত্ববাদ নিয়ে।

তার এই প্রশ্নের উত্তরে মাহফুজ লিখেছেন, সেটাকেই পুরাতন বন্দোবস্ত বলেছি। নূতন বন্দোবস্তের লড়াই দীর্ঘ। কোন শর্টকাট নাই

এই পোস্টের কিছুক্ষণের মধ্যেই ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। ওই পোস্টে তিনি বলেন, জুলাই আমাদের সবার।

দলীয় বা আদর্শিক বিরোধের জেরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত না। এখানে শিবির ভূমিকা রেখেছে তাদের 'জনশক্তি' ও কো-অর্ডিনেশন দিয়ে। বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে শিবিরের কর্মীরা অভ্যুত্থানকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, ক্ষেত্র বিশেষ চালিয়ে নিয়ে গেছেন। ছাত্রদল ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিস্ট বাহিনীকে প্রতিরোধ করেছে, প্রতিরোধ স্পটগুলোতে লড়াই করেছে, তৃণমূলে লীগকে প্রতিরোধ করেছে।

ছাত্রশক্তি কো-অর্ডিনেট করসে মাঠে-সামনে থেকে, সিভিল সোসাইটি আর কালচারাল সার্কেলে এবং আস্থা তৈরি করতে পেরেছে।

ওই পোস্টে তিনি আরো বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, ছাত্র ফেডারেশন ও অন্যান্য বাম ছাত্র সংগঠনগুলো মাঠ ও বয়ান ধরে রাখসে, বামপন্থী সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো জুলাইয়ের শেষ দিনগুলোতে মাঠে নেমে জনগণের মধ্যে সাহস সঞ্চার করেছে। আলেম ও মাদরাসাছাত্ররা রাজপথে নেমে দীর্ঘসময় প্রতিরোধ ধরে রেখেছিলেন। যাত্রাবাড়ী যার উজ্জ্বল উদাহরণ। শ্রমজীবীরা এবং প্রাইভেটের শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধের স্পটগুলোতে দীর্ঘসময় লড়াই করেছে, রিকশাচালক ও নিম্ম, নিম্ম-মধ্যবিত্ত মানুষেরা প্রতিরোধ গড়েছেন।

উপদেষ্টা তার ফেসবুকে আরো জানিয়েছেন, নারীরা রাজপথে লড়েছে এবং আহতদের সহযোগিতা করেছে। অভিভাবক বিশেষ করে মায়েরা, বোনেরা কার্ফিউর দিনগুলোতে এবং জুলাইয়ের শেষ থেকে রাস্তায় নেমে সাহস জুগিয়েছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধের স্পটগুলোতে নিজেরাই নেতৃত্ব দিয়ে অভ্যুত্থান এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাংবাদিক সমিতি ও অন্যান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন অভ্যুত্থানের পক্ষে নীরব অথচ কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে।

ছাত্রলীগের একটা অংশ বিদ্রোহ করে অভ্যুত্থানে যুক্ত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, উঠতি মধ্যবিত্ত জুলাইয়ের শেষদিকে নেমে অভ্যুত্থানকে আরো ব্যাপক করেছেন। পেশাজীবী সংগঠনগুলো এবং সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া কর্মীরা জুলাইয়ের শেষদিকে একাত্মতা প্রকাশ করে অভ্যুত্থানকে শক্তিশালী করেছেন। প্রবাসী শ্রমিক, চাকুরে এবং প্রফেশনালরা জুলাইকে, বাংলাদেশের লড়াইকে বৈশ্বিক করতে ভূমিকা রেখেছেন।

সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার এবং র‍্যাপাররা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন। জনগণের লড়াইয়ের কার কোন অবদান অস্বীকার করবেন?