জাতীয়

স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ জুলাই গণঅভ্যুত্থান: প্রধান উপদেষ্টা

Reporter

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান। এর মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এ সকল লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জুলাই শহীদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা এক বাণীতে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো- একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে তা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।

গণঅভ্যুত্থান দিবসের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ (৫ আগস্ট)। এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, যাদের মুখবন্ধ আন্দোলনের ফসল আমাদের এই ঐতিহাসিক অর্জন, তাদের সবাইকে আমি এই দিনে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর, পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করি সকল জুলাই যোদ্ধাকে যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন, হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি। জাতি তাদের অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।’

গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সাথে আলোচনা চলমান আছে। একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলে তিনি উল্লেখ করেন।