মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘গেজেট পরিবর্তন না হওয়ায় হালদা নদীর উন্নয়নমূলক অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই এ নদী রক্ষায় গেজেট পরিবর্তন করা হবে।’
হালদা নদী রক্ষায় গেজেট সংশোধনের মাধ্যমে তামাক চাষ ও নদী দূষণ বন্ধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৮অক্টোবর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মৎস্য হেরিটেজ বাস্তবায়ন তদারকি কমিটির ১৫তম সভায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘হালদা নদী উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে একযোগে ও সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য আজকের সভা থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রয়োজনে হালদা নদী রক্ষায় ডিপিপি ও চলমান প্রকল্পের বাইরে থেকেও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার উপায় নিয়ে গবেষণা করতে হবে।’
হালদা নদী রক্ষায় সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রকল্প মানে শুধু অর্থ ব্যয় নয়, বরং প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে সঠিক পরিকল্পনা, কার্যকর বাস্তবায়ন ও তদারকি অত্যন্ত জরুরি।’
তামাক চাষ বন্ধের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘তামাক চাষের কারণে হালদা নদীর তীরবর্তী ভূমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, যা নদীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।’ উপদেষ্টা তামাক চাষ বন্ধে কৃষকদের বিকল্প জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। বলেন, ‘হালদা নদীকে তামাক চাষমুক্ত করতে হবে। এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ‘হালদা নদী রক্ষায় গভীরভাবে পর্যালোচনা করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা চিহ্নিত করা হবে। বর্তমান সরকারের সময়ের মধ্যেই হালদা নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় যেসব কাজ করার প্রয়োজন, তা করা হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস.এম মনিরুজ্জামান।
সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুসরাত সুলতানা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক জমির উদ্দিন, মৎস্য অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সালমা বেগমসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে ‘হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়)’-এর লক্ষ্যমাত্রা ও অগ্রগতি বিষয়ে উপস্থাপনা করেন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।
পরবর্তী পর্যায়ে হালদা নদীর সমস্যা, সম্ভাবনা ও সমাধানের উপায় বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া।