জাতীয়

তিনটি জাতীয় নির্বাচন পর্যালোচনায় কমিশন গঠন, নেতৃত্বে সাবেক বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগ পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় নির্ধারণে একটি কমিশন গঠন করেছে সরকার।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এসব নির্বাচনে নানা কৌশলে জনগণের ভোটাধিকার খর্ব করে একটি বিশেষ দলকে ক্ষমতায় আনার অভিযোগ উঠেছে।

এই প্রেক্ষাপটে উত্থাপিত অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় নির্ধারণে সরকার নিম্নরূপ একটি কমিশন গঠন করেছে।

কমিশনের সভাপতি করা হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইনকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন— সরকারের সাবেক গ্রেড-১ কর্মকর্তা শামীম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণ, ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন এবং নির্বাচন বিশ্লেষক ড. মো. আব্দুল আলীম।

কমিশনের কার্যপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে ৯টি বিষয়ের আলোকে:

(ক) ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক, নাগরিক সংগঠন, তদারকি প্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগ বিশ্লেষণ;

(খ) নির্বাচনে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এবং এর নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত পর্যালোচনা;

(গ) তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ভূমিকা ও রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি সংক্রান্ত অভিযোগ বিশ্লেষণ;

(ঘ) নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর ভূমিকা পর্যালোচনা;

(ঙ) আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ;

(চ) তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ যাচাই ও অনুসন্ধান;

(ছ) নির্বাচন অনিয়মের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ;

(জ) ভবিষ্যতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও মানসম্পন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুপারিশ প্রণয়ন;

(ঝ) প্রয়োজনে দলিল দস্তাবেজ তলব ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করার ক্ষমতা প্রয়োগ।

প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিশন দেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন করতে পারবে। প্রয়োজনে যেকোনো সরকারি দপ্তরের নথিপত্র তলব এবং সংশ্লিষ্ট বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন সরকারের কাছে দাখিল করতে হবে কমিশনকে। কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও লজিস্টিক সহায়তা দেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।