যখন একটি দেশের যুব সমাজ সক্রিয় থাকে তখন কোনো বাধা তাদের দমিয়ে রাখতে পারে না এমন কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই আর অমীমাংসিত থাকতে পারে না। আমি যুবসমাজের প্রত্যেক সদস্যকে আহ্বান জানাই, তোমাদের মেধা, শক্তি এবং সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজের ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখো। তোমাদের সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত অর্জনে সীমাবদ্ধ না রেখে অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হোক।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ আমরা তারুণ্যের শক্তিকে উদযাপন করছি। এটিই আমাদের জাতির চালিকাশক্তি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যখন একটি দেশের যুবসমাজ সক্রিয় থাকে, উদ্যমী এবং উদ্ভাবনী শক্তিতে বলীয়ান হয়, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাদের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে রাখতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি আজ কেবল শিক্ষাক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নেই। তরুণরা স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এই তরুণরাই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তরুণরাই যুগে যুগে এ দেশের ইতিহাস রচনা করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের চলার পথে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে, কখনো তা জনস্বাস্থ্যের সংকট, কখনো শিক্ষার অপর্যাপ্ত সুযোগ, আর কখনো পরিবেশগত বিপর্যয়। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে হতাশ না হয়ে বরং এগুলোকে আমাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আমি আশা করি এ কাজেও আমাদের তরুণরা নেতৃত্ব দেবে।
এর আগে দেশ গঠনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ১২ তরুণকে ইয়্যুথ অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা নগদ এক লাখ টাকা বা প্রাইজবন্ড, একটি সম্মাননা ক্রেস্ট এবং একটি সার্টিফিকেট পাবেন বলেও এর আগে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
যারা পুরস্কার পেলেন-যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে অসাধারণ অবদানে পুরস্কার পান তিন জন। বগুড়ার সুরাইয়া ফারহানা রেশমা, মাগুরার মো. আক্কাচ খান এবং নোয়াখালীর মো. জাকির হোসেন।
শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, কারিগরি ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য পুরস্কার পান ঝালকাঠির মো. খালেদ সাইফুল্লাহ ও গাইবান্ধার মো. শাহাদৎ হোসেন।
দেশপ্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতার ক্ষেত্রে এবার পুরস্কার পেয়েছেন পাবনার মো. দ্বীপ মাহবুব এবং রাজশাহীর হাসান শেখ।
এছাড়া লালমনিরহাটের মো. জামাল হোসেন, কক্সবাজারের নুরুল আবছার এবং রাজশাহীর মো. মুহিন (মোহনা) জেষ্ঠদের প্রতি আদর্শ সেবা/সমাজকল্যাণে অসাধারণ অবদানের জন্য পুরষ্কৃত হন।
ক্রীড়া, কলা ও সাংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানে পুরস্কার পেলেন সাতক্ষীরার আফঈদা খন্দকার এবং বান্দরবানের উছাই মং মার্মা (ধুংরী হেডমন)।
এর আগে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অ্যাওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম জানান, ‘যুব কল্যাণ তহবিল আইন, ২০১৬’ অনুযায়ী সামাজিক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জন্য পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ১২ জনকে ‘ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড- ২০২৫’ দেওয়া হবে।