মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত দিতে ভারতে চিঠি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাম্প্রতিক বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংয়ের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা তৌহিদ বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার জন্য ভারতকে অবশ্যই চিঠি পাঠাবে ঢাকা। আজ রাতে বা আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকালে ভারতে অবশ্যই চিঠি যাবে।
এ সময় ভারত কোনো উত্তর না দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, ‘এখনই মন্তব্য করবো না’ বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
নিরাপত্তা উপদেষ্টার আসন্ন দিল্লি সফরে শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে দেশে ফেরত আনার প্রসঙ্গ উঠবে কিনা সে বিষয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।
এ অবস্থায় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই- তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যার্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে দুপুরে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দেয়ার জন্য ভারতের কাছে আবারও চিঠি দেয়া হবে। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে এটা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ মানুষের বিরুদ্ধে একটা শত্রুতা এবং নিন্দনীয় আচরণ।’
এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দেন। মামলার দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। তবে এক নম্বর অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আর রাজসাক্ষী হয়ে সত্য উন্মোচনে সহায়তা করায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।