মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রায়টির ন্যায্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণার পর সংস্থাটি বলেছে, বিচার ও শাস্তি – দুটিই ন্যায়সংগত হয়নি এবং মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও ত্বরান্বিত করে।
অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এক বিবৃতিতে বলেন, জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ব্যক্তিগতভাবে দায়ী ব্যক্তিদের ন্যায্য বিচার ও তদন্ত অবশ্যই জরুরি। তবে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তার কোনোটিই ন্যায়সংগত বা সুবিচার নয়।।
অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার প্রয়োজন, কিন্তু মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এটি নিষ্ঠুর, অপমানজনক ও অমানবিক শাস্তির এক চূড়ান্ত রূপ, যার কোনো স্থান নেই ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়ায়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, মামলার বিচার এমন একটি আদালতে হয়েছে, যার স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে অ্যামনেস্টি দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। বিচার দ্রুত সম্পন্ন হওয়া এবং আসামিদের অনুপস্থিতি ন্যায়বিচারের মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে।
শেখ হাসিনার আইনজীবী আদালতের নিযুক্ত ছিলেন উল্লেখ করে ক্যালামার্ড বলেন, রক্ষাকবচ হিসেবে একজন আইনজীবী থাকলেও তাকে মামলার প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, এই রায়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বরাবরই মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আসছে। তাদের দাবি, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যায় না—বরং এটি অধিকারের লঙ্ঘন ও শাস্তির অমানবিক চর্চাকে উৎসাহিত করে।