জাতীয়

এলডিসি উত্তরণ বাংলাদেশের জন্য একইসঙ্গে সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ: লুৎফে সিদ্দিকী

Reporter

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ বাংলাদেশের জন্য একইসঙ্গে বিশাল সুযোগ ও বড় চ্যালেঞ্জ।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ব্যাংককে অনুষ্ঠিত আইএলও এশিয়া-প্যাসিফিক কনফারেন্স অন লেবার অ্যান্ড এলডিসি ইস্যুজ-এ মূল বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

লুৎফে সিদ্দিকি বলেন, আয়তনে বাংলাদেশ বিশ্বের ৯৪তম হলেও জনসংখ্যার দিক থেকে এটি অষ্টম বৃহত্তম এবং শহর-রাষ্ট্র বাদে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। বিপুল সংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠী ডিজিটালি সংযুক্ত হলেও অর্থনৈতিকভাবে এখনো পর্যাপ্ত ক্ষমতায়িত নয়।

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর তরুণদের আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে সংস্কার ও সুশাসনের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের মুখে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি এলডিসি সুবিধার ওপর অতিরিক্তভাবে নির্ভরশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, জেনেরিক ওষুধ উৎপাদন এবং আন্তর্জাতিক সুলভ অর্থায়ন এ সুবিধার ফল। তাই এলডিসি-পরবর্তী সময়ে অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করা একটি জটিল চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, বিশ্ব এখন ৫টি অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে—ডি-গ্লোবালাইজেশন, ডিজিটালাইজেশন, ডেফিসিট, ডিকার্বোনাইজেশন ও ডেমোগ্রাফিক্স—যা বাংলাদেশের উত্তরণ প্রক্রিয়াকে আরও কঠিন করছে।

করণীয় বিষয়ে লুফি সিদ্দিকির প্রস্তাব গুলো হলো-

১.উত্তরণকে মেনে নিয়ে মসৃণ রূপান্তর নিশ্চিত করা;

২.বিনিয়োগ আকর্ষণ ও সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন;

৩.রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও নতুন পণ্য উদ্ভাবন;

৪.অবকাঠামো ও প্রশাসনিক সংস্কার বাস্তবায়ন;

৫.ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (FTA) ও ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (EPA) স্বাক্ষর এবং

৬.দক্ষতা উন্নয়ন ও টার্গেটেড প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা।

তিনি জানান, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম বড় FTA/EPA চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত এবং এর মাধ্যমে লক্ষ্যভিত্তিক খাতে ১ লাখ দক্ষ কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারে প্রবেশাধিকারের জন্য শ্রম মানোন্নয়ন জরুরি উল্লেখ করে লুফি সিদ্দিকি বলেন, এজন্যই জাতীয় শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। নৈতিক দায়বদ্ধতা ছাড়াও ব্যবসায়িক সম্প্রদায় নিজেদের স্বার্থেই শ্রম সংস্কারে আগ্রহী, কারণ এর সরাসরি প্রভাব রয়েছে রপ্তানি সুবিধার ওপর।

শেষে তিনি জানান, বাংলাদেশের সংস্কার অঙ্গীকার পূরণে অগ্রগতি হচ্ছে এবং প্রতিটি কাজেই অধিকার (Rights), সম্পর্ক (Relations) ও স্থিতিস্থাপকতাকে (Resilience) গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।