শবে কদর, ইসলামের অন্যতম পবিত্র ও মহিমান্বিত রাত, বিশ্বের মুসলমানদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এটি লাইলাতুল কদর নামে পরিচিত, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ হিসেবে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। পবিত্র কুরআন অনুযায়ী, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা অসীম রহমত বর্ষণ করেন এবং বান্দাদের পাপ ক্ষমা করেন।
শবে কদর অর্থ মর্যাদাপূর্ণ রাত। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, এই রাতে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছিল। কুরআনের সূরা আল-কদরে বলা হয়েছে, "নিশ্চয়ই আমি এটি নাজিল করেছি কদরের রাতে। তুমি কি জানো, কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।" (সূরা আল-কদর: ১-৩)
মুসলমানরা শবে কদর উপলক্ষে সারা রাত ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকেন। এই রাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো:
নফল নামাজ আদায়
কুরআন তিলাওয়াত করা
তওবা ও ইস্তিগফার করা
দরুদ পাঠ ও জিকির করা
গরিব-দুঃখীদের মাঝে দান-সদকা করা
বিশেষ দোয়া করা
শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমান ও প্রত্যাশা সহকারে ইবাদত করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
এই রাতকে আল্লাহ বিশেষ রহমত, মাগফিরাত এবং নাজাতের রাত হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করা না হলেও, এটি সাধারণত রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর (২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯) মধ্যে একটি বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। অনেক ইসলামি স্কলারদের মতে, ২৬ রমজান দিবাগত রাত (২৭তম রাত) শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলমানরা গভীর রাত পর্যন্ত মসজিদ ও ঘরে ইবাদতে মগ্ন থাকবেন। দেশের বড় বড় মসজিদগুলোতে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, শোলাকিয়া ঈদগাহ, চট্টগ্রামের কাসেমুল উলুম মাদ্রাসা, এবং অন্যান্য প্রধান মসজিদে ব্যাপক মুসল্লির সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শবে কদর মুসলমানদের জন্য গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের, আত্মশুদ্ধির এবং আল্লাহর রহমত অর্জনের এক মহা সুযোগ। এই রাতের ফজিলত ও বরকত আমাদের জীবনে শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনুক, এই কামনায় সকলকে শবে কদরের শুভেচ্ছা।