রাজনীতি

১৭ বছর পর ঢাকায় তারেক রহমান, ফুলের মালা দিয়ে বরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঢাকার মাটিতে পা রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটে পৌঁছানোর পর অবশেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার পর ১১টা ৪৪ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তারেক রহমানের সঙ্গে স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও দেশে এসেছেন।

স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিজি-২০২ ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর আজ সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে উড়োজাহাজটি সিলেটে অবতরণ করে। সেখানে কিছু সময় যাত্রাবিরতি দেওয়া হয়। এরপর সেটি ঢাকার উদ্দেশে বেলা ১১টা ৪ মিনিটে বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

এভিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি ১৯২ জন যাত্রী নিয়ে লন্ডন থেকে দেশে আসে। এর মধ্যে ৮৫ জন যাত্রীকে সিলেটে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ১০৭ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি ঢাকার উদ্দেশে সিলেট থেকে রওনা হয়।

বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে ৩০০ ফিটে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে যাবেন তারেক রহমান। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন তিনি।

২০০৭ সালের জানুয়ারিতে দেশের ক্ষমতা নেওয়া সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন বিএনপির তৎকালীন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান। ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ মইনুল সড়কের বাসা থেকে যৌথ বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে দেওয়া হয় এক ডজনের বেশি মামলা। যৌথ বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ভর্তি করা হয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এরপর চিকিৎসার জন্য ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকা ছাড়েন তারেক রহমান।

সে সময়ের সরকারের বিধিনিষেধ আরোপের কারণে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে তার নির্বাসন জীবন শুরু হয়। দেড় যুগের এই নির্বাসনে লন্ডন থেকে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন, দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তারেক রহমান।

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১৩টি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে ৭২টি মামলা হয়। এর মধ্যে অন্তত পাঁচটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় তাকে। গণমাধ্যমেও তার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় আদালতের মাধ্যমে। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর একে একে সব মামলা থেকে খালাস পান তারেক রহমান।