আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না সাবেক তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) তিনি বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই বলে আসছি যে, নির্বাচন করবো না। এ কারণেই আমি সরকার থেকে নিজে সরে যেতে চাইনি। তবে সরকার মনে করেছে, ছাত্র প্রতিনিধিরা থাকলে নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। সে কারণেই আমি সরে গেছি। কিন্তু নির্বাচন করবো না, এই সিদ্ধান্ত আমার আগেই নেওয়া ছিল।’
লক্ষ্মীপুর-১ আসনে মাহফুজ আলমের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। ওই আসনে তার ভাই ও জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম আগেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ বিষয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ‘তিনি এনসিপির নেতা। নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি নির্বাচন করবেন। এতে আমার বলার কিছু নেই।’
এর আগে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে ‘আমার রাজনৈতিক অবস্থান’ শিরোনামে দেওয়া এক পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, নাগরিক কমিটি ও এনসিপি জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল। এ দুটি সংগঠনে তার জুলাই সহযোদ্ধারা থাকায় গত দেড় বছর ধরে তিনি পরামর্শ, নির্দেশনা ও নীতিগত সহযোগিতা দিয়ে আসছেন।
পোস্টে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক লড়াই, সামাজিক ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা, রিকনসিলিয়েশন ও দায়বদ্ধ সমাজ গঠনের কথা তিনি ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছেন। এসব বিষয় তার জুলাই সহযোদ্ধারাও এনসিপি ও নাগরিক কমিটি থেকে তুলে ধরেছেন। তবে এনসিপিকে একটি বড় জুলাই আম্ব্রেলা হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করলেও নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মাহফুজ আলম আরও বলেন, বিদ্যমান বাস্তবতায় জুলাই সহযোদ্ধাদের প্রতি তার সম্মান ও বন্ধুত্ব অটুট থাকবে, তবে তিনি এনসিপির অংশ হচ্ছেন না। জামায়াত-এনসিপি জোট থেকে তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়নি—এটি সত্য নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে ঢাকার কোনো আসন থেকে জোটের প্রার্থী হওয়ার চেয়ে নিজের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখাকে তিনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন।
পোস্টে মাহফুজ আলম বলেন, ইতিহাসের এই পর্যায়ে বাংলাদেশ একটি শীতল যুদ্ধের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কোনো পক্ষ না নিয়ে নিজস্ব বক্তব্য ও নীতিতে অটল থাকাই শ্রেয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিকল্প ও মধ্যপন্থি তরুণ ও জুলাই শক্তির সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। ভবিষ্যতেও রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সব উপায়ে নিজের অবস্থান বজায় রাখার কথা জানান তিনি।