খেলার খবর

‘জার্মান ফুটবলিং পার্সোনালিটি অব দ্য ইয়ার’ হলেন হ্যারি কেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোববার (২১ ডিসেম্বর) হাইডেনহাইমের বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয়ে গোল করে হ্যারি কেন আবারও ইতিহাস গড়েছেন। সেই ম্যাচে প্রথমবারের মতো বায়ার্ন মিউনিখের অধিনায়কত্বও করেন তিনি। এর মাধ্যমে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বুন্দেসলিগায় ১০০ গোলে অবদানের (গোল ও অ্যাসিস্ট) মাইলফলক স্পর্শ করলেন। ৩২ বছর বয়সী এই তারকা দুর্দান্ত বছর কাটানোর স্বীকৃতি হিসেবে জার্মান ফুটবল ম্যাগাজিন কিকার ‘জার্মান ফুটবলিং পার্সোনালিটি অব দ্য ইয়ার’ও ঘোষণা করেছে।

জার্মানিতে যাওয়ার আগেই কেন নিজেকে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার আগে টটেনহ্যামের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে তিনি একের পর এক রেকর্ড ভেঙেছেন এবং ইংলিশ ফুটবলের আইকন অ্যালান শিয়ারারের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ভাঙার পথেও ছিলেন।

তবে টটেনহ্যাম বা ইংল্যান্ডের হয়ে খেলাকালীন একটি বিষয়ই কেনের অধরাই থেকে গিয়েছিল—শিরোপা। ট্রফি জয়ের লক্ষ্যেই নর্থ লন্ডনের ক্লাব ছেড়ে বাভারিয়ান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দিয়েছিলেন এই থ্রি লায়ন্স তারকা।

ক্লাবে প্রথম মৌসুমে গোল করার দিক থেকে জার্মানিতে একাধিক রেকর্ড ভাঙলেও কেন কোনো ট্রফি জিততে পারেননি। সে মৌসুমে বায়ার লেভারকুসেন ঘরোয়া ডাবল জেতে, আর চ্যাম্পিয়নস লিগে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় বায়ার্ন। তবে দ্বিতীয় মৌসুমেই স্বপ্ন পূরণ হয় কেনের। গত গ্রীষ্মে বুন্দেসলিগার শিল্ড জিতে ক্যারিয়ারের প্রথম বড় শিরোপার স্বাদ পান ইংলিশ অধিনায়ক।

বায়ার্নকে লিগ জেতাতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘদিনের ট্রফি-খরা কাটানোর পরই কিকার তাকে ‘জার্মান ফুটবলিং পার্সোনালিটি অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত করে। একই সঙ্গে রোববার তিনি আরেকটি বড় মাইলফলক স্পর্শ করেন। মাত্র ৭৮ ম্যাচে বুন্দেসলিগায় ১০০ গোল অবদানের মাইলফলক স্পর্শ করেন, যার মধ্যে ৮১টি গোল ও ১৯টি অ্যাসিস্ট।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে এরই মধ্যে ৩০ গোল ও তিনটি অ্যাসিস্ট করা কেন ২০২৫ সালে বায়ার্নের সঙ্গে নিজের যাত্রা নিয়ে কথা বলেন তার ক্লেটস ক্লাব চ্যানেলে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ২০২৫ সালের আমার প্রিয় ফুটবল মুহূর্ত হবে বুন্দেসলিগা জেতা। ক্যারিয়ারে প্রথমবার দলগত কোনো ট্রফি জেতা ছিল অসাধারণ অনুভূতি—আমার জন্য, সতীর্থদের জন্য, আর পরিবার-বন্ধুদের জন্যও খুব বিশেষ মুহূর্ত। আমরা দারুণভাবে উদযাপন করেছি, খুব উপভোগ করেছি, আর এটা আমাকে ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছু অর্জনের অনুপ্রেরণা দিয়েছে।’

২০২৬ সালের জন্য বায়ার্ন ঘরোয়া ও ইউরোপীয় শিরোপার লড়াইয়ে টিকে আছে এবং ইংল্যান্ড আবারও বিশ্বমঞ্চে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছে। কেন নিজের প্রত্যাশা নিয়ে বলেন, ‘নতুন বছরের ইচ্ছা হলো আরও উন্নতি করা এবং আশা করি আরও কয়েকটি দলগত ট্রফি জেতা, যার মধ্যে বিশ্বকাপও আছে।’

এর আগে কেন স্বীকার করেছিলেন যে বুন্দেসলিগায় রবার্ট লেভানদোভস্কির অবিশ্বাস্য গোল রেকর্ড তার নজরে রয়েছে। ২০২১ সালে বায়ার্নের হয়ে এই পোলিশ তারকা ৪১টি লিগ গোল করে ইতিহাস গড়েছিলেন। চলতি ২০২৫-২৬ মৌসুমে এর মধ্যেই ১৯ গোল করা কেন আশা করছেন, তিনি সেই রেকর্ড ভাঙতে পারবেন।

স্কাই স্পোর্ট জার্মানিকে কেন বলেন, ‘আমি মনে করি এটা সম্ভব, বিশেষ করে এই মৌসুমে আমার শুরুটা যেভাবে হয়েছে। তবে সামনে এখনও অনেক পথ বাকি। আরও চার-পাঁচ মাস এই মান ধরে রাখতে হবে। ফুটবলে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো দীর্ঘ সময় ধরে ধারাবাহিক থাকা। এটা অসাধারণ একটি রেকর্ড, ভাঙা কঠিন হবে—আমি সেটা জানি। তবে এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে খেলতেই আমি উপভোগ করি।’

বড়দিন ও শীতকালীন অবকাশের জন্য আপাতত বুন্দেসলিগার দলগুলোর কোনো ম্যাচ নেই। আগামী ১১ জানুয়ারি বুন্দেসলিগায় ঘরের মাঠে ভলফসবুর্গের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আবার মাঠে ফিরবে বায়ার্ন। ২০২৫-২৬ মৌসুমের প্রথমার্ধে ভিনসেন্ট কোম্পানির দল লিগে অপরাজিত থেকেছে এবং নয় পয়েন্ট ব্যবধানে তারা শীর্ষে অবস্থান করছে।